জলবায়ু

দক্ষিণ এশিয়ায় তাপপ্রবাহ থেকে বেঁচে থাকার সংগ্রাম – পর্ব ১, বাংলাদেশ

রাজধানী ঢাকায় লাফিয়ে বাড়ছে উঞ্চতা, সেখানে কর্মরত সাংবাদিক নাসিব আহসান জানাচ্ছেন কিভাবে তারা দক্ষিণ এশিয়ার উষ্ণতম তাপমাত্রার সাথে দৈনিক লড়াই করে চলছেন
বাংলা

সম্পাদকীয় বার্তা: দক্ষিন এশিয়ার বেশ কয়েকটি বড় বড় শহরের বাসিন্দারা কীভাবে বিপর্যস্ত তাপপ্রবাহের মোকাবেলা করছেন তা নিয়ে আমরা তিনটি ভিডিও প্রামান্য প্রকাশ করছি – আজ প্রকাশিত হলো এই সিরিজের প্রথম পর্ব। গত বছরের মে মাসে চলমান তাপপ্রবাহের সময় এই তিনটি ভিডিও চিত্রায়ন করা হয় যা চলতি বছরের গ্রীষ্ম মৌসুমের আগে প্রকাশ করা হলো। এই তিনটি ভিডিও ডায়েরির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তানের ভ্লগাররা তীব্র গরমের সময়ে তাদের জীবনের একটি দিন এতে তুলে ধরেছেন।

এই ভ্লগগুলোর মাধ্যমে, আমরা তিনটি ভিন্ন দেশের বিভিন্ন পটভূমির সাংবাদিকদের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে সেখানে তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে মানুষের উপরে যেসব প্রভাব পড়ছে তা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। জলবায়ু সংকট নিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক এবং বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদনের পাশাপাশি এই সিরিজটির মাধ্যমে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর বাস্তব চিত্রকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

বাংলাদেশের ঢাকায় কর্মরত মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিক নাসিব আহসান ১৯ মে ২০২২-এর সকালে তার ভ্লগটি শুরু করার  প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন আর সেই সময় বাইরের তাপমাত্রা ছিল ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর এর ফলে এরইমধ্যে তিনি প্রচন্ড আর্দ্রতা গরম অনুভব করছিলেন।

পেশাগত কারনে আহসানকে প্রায়ই বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে  ভ্রমণ করতে হয়। কিন্তু ভিডিও ডায়েরি বা ভ্লগ তৈরির এই দিনটিতে তিনি নিজ বাসা থেকে অফিসে যাচ্ছেন। পথে, প্রচণ্ড গরমে ঢাকায় তীব্র যানজটের মধ্যে দিয়ে থাকে চলাচল করতে হচ্ছিল। এসময় প্রধান সড়কে তার আশেপাশে চলাচলকারী প্রায় সব মানুষই ছিল প্রচর্ড ঘর্মাক্ত। রাস্তার পাশে দেখা যাচ্ছে অনেকেই স্টলে আখের রস এবং ডাবের পানি বিক্রি করছেন। প্রচন্ড গরমে এধরেনর পানীয় বেশ স্বস্তি এনে দেয়। কিন্তু গরমের কারনে এর চাহিদা  বাড়ার সাথে সাথে এসবের মূল্যও যেন লাফিয়ে বেড়েছে।

যানজট আর গরমের মধ্য দিয়ে আহসান উত্তপ্ত ও ক্লান্ত হয়ে অফিসে পৌঁছায়। তার বাসা এবং অফিস শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হলেও ঢাকার রাস্তাঘাটে তার লেশমাত্র নেই। আহসানের মতো ঢাকার অনেক বাসিন্দা যারা সারাদিন ঘরের বাইরে কাজ করে।  তারা প্রত্যেকেই প্রচন্ড উঞ্চতার সাথে যেন নিত্য লড়াই করে চলে।

এবছর এরইমধ্যে মার্চের মাঝামাঝিতে মৃদু একটি তাপপ্রবাহ  বাংলাদেশের কিছু অংশে বয়ে যায়। গত বছর, জুলাই মাসে রাজশাহী ও সৈয়দপুর এলাকায় তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছিল, যা দেশের কৃষিব্যবস্থায় মারাত্বক একটি ঝুঁকি সৃষ্টি করে। এনিয়ে তখন বেশখানিকটা উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে। স্বাস্থ্যগত প্রভাবের পাশাপাশি, চরম তাপপ্রবাহ প্রতি বছর ঢাকার অর্থনীতিতে প্রায় ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের শ্রম উৎপাদনশীলতা হ্রাস করে।

দক্ষিণ এশিয়ায় তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি ভূক্তভোগী হচ্ছে  দুর্বল এবং নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠী, যাদের শীতাতপ নিয়ন্ত্রনের সুযোগ একেবারেই নেই এবং এই ধরনের আবহাওয়াগত পরিস্থিতি এদের স্বাস্থ্য ও জীবিকার উপর চরম নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তানে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর মধ্যে জলবায়ু, সমাজ এবং সংস্কৃতিতে অনেক মিল রয়েছে। এই বিশাল সংখ্যক মানুষ বছর বছর বয়ে যাওয়া  তাপপ্রবাহের সাথে একইভাবে লড়াই করে আসছে।  যদিও সরকারী কাগজপত্রে এই ধরনের জনগাষ্ঠীকে সাহায্য এবং নির্দেশনা প্রদানের ব্যবস্থা থাকলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা মোটেই যথেষ্ট নয় বলেই সকলের ধারনা।

দক্ষিণ এশিয়ায় তাপপ্রবাহ থেকে বেঁচে থাকার সংগ্রামের আমাদের ভিডিও সিরিজের পর্ব ২ এবং পর্ব ৩ দেখুন

Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.

Strictly Necessary Cookies

Strictly Necessary Cookie should be enabled at all times so that we can save your preferences for cookie settings.

Analytics

This website uses Google Analytics to collect anonymous information such as the number of visitors to the site, and the most popular pages.

Keeping this cookie enabled helps us to improve our website.

Marketing

This website uses the following additional cookies:

(List the cookies that you are using on the website here.)