জলবায়ু

‘অন্তত একটি মুখের অন্ন যোগানের কষ্ট থেকে মুক্তি’: জলবায়ু বিপর্যয়ের প্রভাবে বাল্যবিবাহের হার বাড়ছে বাংলাদেশে

বন্যা, ঝড় এবং ঘূর্ণিঝড়ের মতো দুর্যোগ আক্রান্ত পরিবারগুলির বক্তব্যে উঠে এসেছে তাদের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক দূর্দশার কথা
বাংলা
<p>বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলার একটি উপকূলীয় গ্রামে এক কিশোরীর বিয়ের দিনে তার হাতে মেহেদীর সাজ (ছবি:এলামি)</p>

বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলার একটি উপকূলীয় গ্রামে এক কিশোরীর বিয়ের দিনে তার হাতে মেহেদীর সাজ (ছবি:এলামি)

রুকসার বেগমের* বয়স এখন ২১। তার পরিবার একসময় বাংলাদেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ব্রক্ষ্মপূত্র নদীর এক চরে বসবাস করতো। কিন্তু ২০১৫ সালে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ এক বন্যায় নিজেদের ঘরবাড়ি হারিয়ে তারা অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়।

তিন সন্তানকে নিয়ে তিনি এখন বাস করেন রাজধানীর ঢাকার করাইল বস্তিতে। রুকসারের দুই মেয়ের বয়স যথাক্রমে ৭ এবং ৫ বছর। আর একমাত্র ছেলেটির বয়স মাত্র ৩ বছর।

একসময় পড়ালেখায় বেশ আগ্রহ ছিল রুকসার বেগমের। কিন্তু মাত্র ১৫ বছর বয়সে বিয়ে হয়ে যায় তার। এখন পড়াশলেখা তো দুরের বিষয়, নিজের সন্তানদের নিয়ে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়াই কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে।

“আমার একসময় অনেক স্বপ্ন ছিলো। কিন্তু বানের পানিতে আমাদের বসতভিটা হারিয়ে যাওয়ার মতোই সব স্বপ্নগুলো যেন কোথায় হারিয়ে গেছে,” ডায়ালগ আর্থের কাছে এভাবেই নিজের বর্তমান অবস্থার কথা তুলে ধরতে গিয়ে রুকসার বলেন।

রুখসারের বাবা আহমেদ শাকিলের* কন্ঠে অসহায়ত্বই যেন প্রকাশ পাচ্ছিল। কারণ এত অল্প বয়সে নিজের কন্যাকে বিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্তটি তার নিজেরই ছিল।

তিনি বলেন, “আমরা কখনই এত অল্প বয়সে মেয়েটিকে বিয়ে দিতে চাইনি। কিন্তু সবকিছু মিলিয়ে জীবনযুদ্ধে আমরা হেরে গিয়েছিলাম। ২০০৭ সালের বন্যায় বাপ-দাদার রেখে যাওয়া ঘরবাড়ি হারিয়ে যায়। এরপর বেঁচে থাকার তাগিদে অন্যত্র চলে যাই। একটু উঁচু জমিতে আবার ঘর বাঁধি। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস, ২০১৫ সালের বন্যায় সেই বাড়িটিও হারিয়ে যায়। সেই সাথে আমার সামান্য কিছু কৃষিজমিও তলিয়ে যায় বন্যার পানিতে। এখন তার সবই নদীর পানির নিচে। সব হারিয়ে ঢাকায় পালিয়ে আসা ছাড়া আমাদের পরিবারের আর কোনো গত্যন্তর ছিল না।”

পরিবারটি কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকায় আসে নূর চৌধুরীর সহযোগিতায়। তিনি আগেই ঢাকায় এসেছিলেন জীবিকার সন্ধানে। নূর ঢাকায় রিকশা চালিয়ে উপার্জন করে থাকে। ঢাকায় সে কড়াইল বস্তিতেই বসবাস করতেন। দুই বছর পরে শাকিল রুকসারকে ৩৭ বছর বয়সী নূরের সাথে বিয়ে দিতে রাজী হন।

Aerial photograph of a slum on the edge of a river, skyscrapers in the distance
করাইল রাজধানী ঢাকার ভিতরে একটি অন্যতম বস্তি। সারা দেশে জলবায়ূ পরিবর্তনের প্রভাবে চরম আবহাওয়ার কারণে বহু বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি এবং পরিবারের এই বস্তিতে এসে আশ্রয় নেয়। দিন দিন এখানে এই ধরনের মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলছে (ছবি: এলামি)

“পরিবারের একজনকে বাইরে বিয়ে দেয়ার মানে হচ্ছে সংসারে অন্তত একজনের খাবার জোগাড় করার চিন্তা থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া। এছাড়া আমাদের  আর কি-ই বা করার ছিল, বলুন? সব হারিয়ে আমরা যখন একেবারে নি:স্ব, তখন আমার পরিবারটিকে কোনোরকম বাঁচার পথ দেখায় নূর।”

রুখসারের গল্প বাংলাদেশের দুর্যোগ-প্রবণ এলাকায় বসবাসরত হাজারো মেয়ের মতোই অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ের ভাগ্য বরণ করার মতো কঠিন বাস্তবতারই প্রতিফলন। দিন দিন এই ঘটনা যেন বেড়েই চলেছে।

বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন-১৯২৯ অনুসারে বাংলাদেশে একজন নারীর বিবাহের বৈধ বয়স  নূন্যতম ১৮ এবং পুরুষের ২১। তবে এই আইনের লংঘন প্রতিনিয়তই চোখে পড়ে। ইউনিসেফের মতে, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশেই বাল্যবিবাহের হার সবচেয়ে বেশি আর বিশ্বে এক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০২৩ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে এদেশে কমপক্ষে ৪১.৬ শতাংশ মেয়ে বাল্য বিবাহের শিকার হয়, অর্থাৎ এই বিপুল সংখ্যক নারীকে ১৮ বছর হবার আগেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হয়। আশংকার বিষয় হচ্ছে, এই সংখ্যা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। সরকারী তথ্য মতে, ২০২২ সালে ৪০.৯ শতাংশ নারীর বিয়ে ১৮ বছরের আগেই সম্পন্ন হয়। ২০২১ এবং ২০২০ সালে এই সংখ্যাগুলো ছিল যথাক্রমে ৩২.৪% এবং ৩১.৩%।

রুকসা আর নূরের মতোই করাইল বস্তিতে বসবাস করা আরেকজন কিশোরীর সাথে কথা হয় ডায়ালগ আর্থের। ১৪ বছরের এই কিশোরী রুকসার মতোই বাল্যবিবাহের আশংকায় দিন কাটাচ্ছেন বলে জানান। এই কিশোরীর পরিবার ছিল বরিশাল বিভাগের দ্বীপ জেলা ভোলার বাসিন্দা। ২০২৩ সালে সাইক্লোন মিধিলির ভোলার অনেক এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেসময় মেঘনা নদীর ভা্ঙ্গনে আরো বহু পরিবারের মতো এই কিশোরীটির পরিবারও সহায় সম্বল সব হারিয়ে জলবায়ু অভিবাসীতে পরিণত হয়। আর এরপর তার পরিবারের ঠাই হয় রাজধানীর করাইল বস্তিতে। 

“আমি আমার বাবা-মাকে রাতে আমার বিয়ের কথা বলতে শুনি। তারা মনে করেছিল আমি ঘুমিয়ে আছি, কিন্তু আমি আসলে সব শুনতে পেয়েছিলাম। এসব কথা শোনার পর আমি আতংকিত হয়ে পড়ি,” তিনি বলেন।

জলবায়ু বিপর্যয়ের সামাজিক প্রভাব

২০২২ সালে ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি (আইআরসি) একটি সমীক্ষা পরিচালনা করে যাতে দেখা যায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের সাথে সরাসরি যুক্ত বাল্যবিবাহের ৩৯% বৃদ্ধি পেয়েছে।

People walk up a gang plank over flood waters, carrying their belongings
২০১৪ সালে ঝড়ের সময় ভোলা জেলার বাসিন্দারা নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে যাচ্ছে। গত এক দশকে দুর্যোগের কারণে প্রায় ১৫ মিলিয়ন বাংলাদেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। (ছবি: মোহাম্মদ পনির হোসেন/এলামি)

বরিশাল, ভোলা, খুলনা এবং সাতক্ষীরার মতো দুর্যোগ-প্রবণ এলাকায় আইআরসির গবেষণায় দুর্যোগের পর বাল্যবিবাহের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে অর্থনৈতিক দুর্দশা, সামাজিক চাপ, খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি এবং আর্থিক সংকটকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল ডিসপ্লেসমেন্ট মনিটরিং সেন্টারের তথ্য অনুসারে, ২০১৪ – ২৩ সময়কালে দুর্যোগের কারণে প্রায় ১৫ মিলিয়ন বাংলাদেশী বাস্তুচ্যুত হয়, যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছে ঝড় (১০,৩ মিলিয়ন) এবং বন্যায় (৪.৩মিলিয়ন)। ২০১৯, ২০২০, ২০২২ এবং ২০২৩ ছিল সবচেয়ে খারাপ সময়, এই সময়ে প্রতিবছর এক মিলিয়নেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয় এবং ২০১৯ এবং ২০২০ উভয় ক্ষেত্রেই ৪ মিলিয়নেরও বেশি বাস্তুচ্যুত হয়।

দেশের ৭১০ কিলোমিটার নিচু উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষেরা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম ডায়ালগ আর্থকে বলেন, “দেশের উপকূলীয় অঞ্চল থেকে প্রতিদিন প্রায় ২,০০০ মানুষ ঢাকায় পাড়ি জমায়, যার ৭০% প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই শহরে আসে।

ঢাকায় প্রায় ৫ হাজার বস্তিতে ৪ মিলিয়ন মানুষ বাস করে আর চট্টগ্রামের ২০০টি বস্তিতে বাস করে প্রায় ১.৪ মিলিয়ন অভিবাসী। তবে এদের মধ্যে কত মানুষ জলবায়ু অভিবাসী সে বিষয়ে সুষ্পষ্ট কোনো তথ্য নেই।

যদিও সরকারের মতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে প্রতি সাতজন বাংলাদেশি বাস্তুচ্যুত হবে। তাদের অনেকেই অবশ্যম্ভাবীভাবে ঢাকার মতো বড় শহরে পাড়ি জমাবে জীবিকা নির্বাহের উপায় খুঁজে বের করার আশায়।

ঝুঁকির মুখে নারী

আন্তর্জাতিক সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন-এর একটি প্রতিবেদনে “বাল্যবিবাহ-জলবায়ু হটস্পট দেশ” হিসেবে বিবেচিত ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এনজিওটির প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয় ২০৫০  সালের মধ্যে এসব দেশের প্রায় ৪০ মিলিয়ন মেয়ে জলবায়ু সংকটের কারণে বাল্যবিবাহের মতো কঠোর বাস্তবতার  মুখোমুখি হবার মতো চরম ঝুঁকিতে থাকতে পারে।

ওয়াহিদা জামান শিথি কাজ করেন নুরা হেলথ নামক একটি সংস্থায় হেলথ কমিউনিকেশন লিড হিসেবে। তিনি বাল্যবিবাহ মোকাবেলায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দুর্যোগ-প্রবণ কুড়িগ্রাম অঞ্চলে কাজ করেছেন। তিনি দুর্যোগ, বাস্তুচ্যুতি, আর্থ-সামাজিক পরিণতি এবং বাল্যবিবাহের ব্যাপকতার মধ্যে সরাসরি সংযোগের ওপর জোর দেন।

বেঁচে থাকার সংগ্রামরত একটি পরিবার বাল্যবিবাহকে একটি বিপদ কাটিয়ে উঠার কৌশল হিসেবে মনে করে
ওয়াহিদা জামান শিথি, নুরা হেলথ

তিনি বলেন. “বেঁচে থাকার সংগ্রামরত একটি পরিবার বাল্যবিবাহকে একটি বিপদ কাটিয়ে উঠার কৌশল হিসেবে মনে করে। একাধিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হওয়ার পরে এবং ঘন ঘন স্থানচ্যুতির পর, আর্থ-সামাজিক চাপ বাড়তে থাকে। এমনকি তারা তাদের শিশুদের জন্য একটি স্থায়ী স্যানিটেশন সুবিধা এবং পানীয় জলের একটি নির্ভরযোগ্য উৎস নিশ্চিত করতে পারে না। কন্যা হলে তাদের [সন্তানের] নিরাপত্তা নিয়েও ভীত থাকে এসব পরিবার।”

২০২১ সালে প্রকাশিত ‘দ্য ম্যাপিং অব ক্লাইমেট চেঞ্জ-রিলেটেড ভালনারেবিলিটিস অ্যান্ড চাইল্ড ম্যারেজ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক  গবেষণায় পারিবারিক স্থিতিশীলতার উপর পরিবেশগত বিপর্যয়ের বিধ্বংসী প্রভাবের বিষয় তুলে ধরা হয়। আর এটিকে বাল্যবিবাহের আরেকটি কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংখ্যা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এবং উক্ত গবেষণার একজন সহ-গবেষক  মোহাম্মদ বেল্লাল হোসেন ডায়ালগ আর্থকে বলেন, “গবেষণার জন্য আমাদের ফিল্ডওয়ার্কের সময় আমরা দেখেছি বন্যা ও নদীভাঙনের পর মেয়েদের বিয়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ” তিনি আরো বলেন, “যখন জলবায়ুসৃষ্ট বিপর্যয় যেমন বন্যা, নদীভাঙন, ঘূর্ণিঝড় এবং ইত্যাদির ফলে সরকারী এবং ব্যক্তিগত সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন তার প্রভাব আসলে দীর্ঘমেয়াদী এবং সুদূরপ্রসারী হয়ে থাকে।”

An empty flooded classroom
২০২৩ সারের ১০ আগষ্ট বাংলাদেশের বান্দরবানে বন্যার কারণে একটি স্কুলের শ্রেণীকক্ষ বন্ধ হয়ে যায়। এ ধরনের দুর্যোগে দরিদ্র পরিবারেরর যেসব মেয়ের লেখাপড়া বাধাগ্রস্ত হয়, তারা পরিবারের কাছে  অনেক ক্ষেত্রেই ‘অর্থনৈতিক বোঝা’ হিসাবে পরিগণিত হয়। আর এধরনের পরস্থিতিই বাল্যবিবাহের মূল কারণগুলোর মধ্যে একটি (ছবি: মোহাম্মদ শাজাহান /এলামি) )

অধ্যাপক হোসেন বলেন, “দুর্যোগে যেসব পরিবারের বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে যায়, তাদের শুধু সম্পত্তিরই ক্ষতি হয় না, বরং ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাবর পাশাপাশি তারা অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। এই দুর্যোগের সময় স্কুল-কলেজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়্য এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব হিসেবে শিক্ষা ব্যাহত হওয়া কন্যা শিশুরা বাল্যবিবাহের হুমকির মুখে পড়ে। এই ধরনের সংকটময় পরিস্থিতিতে মেয়েদের পরিবার বিয়ে দেয়াকে একটি বিপদ থেকে পরিত্রানের উপায় হিসেবে বিবেচনা করে। “

আইআরসির সমীক্ষাটিতেও দুর্যোগ-পরবর্তী চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে বাল্যবিবাহকে একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব হিসেবে তুলে ধরা হয়।

এতে বলা হয় ৮৬% মেয়েদের গৃহস্থালী কর্মকান্ড বেড়ে যায়, ৩৭.৪%  নারীর পরিবারেরর অন্যান্য সদস্যদের জন্য কেয়ার গিভিং দায়িত্ব বেড়ে যায়, এবং প্রায় ৩০.৯% মেয়েদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত সম্পদ হারিয়ে যায়। আর এসব কারনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো প্রায়ই বাল্যবিবাহকে একটি সহজ পরিত্রানের উপায় হিসেবে বেছে নেয় বলে মনে করেন অধ্যাপক হোসেন।

অধ্যাপক হোসেনের মতে, দুর্যোগের পর শিক্ষা কার্যতক্রম চালু হতে দেরি হলে সেটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে আরো ভাবিয়ে তোলে। এই পরিস্থিতিতে পরিবারগুলো তাদের কন্যা সন্তানদের একপ্রকার অর্থনৈতিক বোঁঝা হিসেবে মনে করেন।

আইআরসি বাংলাদেশের পরিচালক হাসিনা রহমান বলেন, “বাংলাদেশে এখন অর্ধেক মেয়েরই বিয়ে হয় তাদের ১৮তম জন্মদিনের আগে। আর ২২ শতাংশের বিয়ে হয় ১৫ বছর বয়সের আগে।”

তিনি বলেন, এই সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে যেখানে পানিতে লবণাক্ততার ফলে পরিবারগুলো খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা এবং দুর্যোগের তীব্রতার সম্মুখীন হচ্ছে প্রতিদিন।”

* প্রতিবেদনটিতে নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।.