জলবায়ু

‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ কী, আর দক্ষিণ এশিয়ার জন্য এটি কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ?

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো ব্যাপকভাবে অপরিবর্তনীয় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এ ধরনের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে সহায়তার প্রাপ্তির অভাব রয়েছে
<p>ভারত ও বাংলাদেশের বৃহৎ এলাকা &#8211; যেমন খুলনার এই পরিবারটি &#8211; ২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি মুখোমুখি হয়েছে। চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলো দক্ষিণ এশিয়ায় আরও গুরুতর হতে চলেছে, যা জলবায়ু পরিবর্তন-সম্পর্কিত ক্ষয়ক্ষতির প্রধান নিয়ামক। (ছবি: নজরুল ইসলাম/এলামি)</p>

ভারত ও বাংলাদেশের বৃহৎ এলাকা – যেমন খুলনার এই পরিবারটি – ২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি মুখোমুখি হয়েছে। চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলো দক্ষিণ এশিয়ায় আরও গুরুতর হতে চলেছে, যা জলবায়ু পরিবর্তন-সম্পর্কিত ক্ষয়ক্ষতির প্রধান নিয়ামক। (ছবি: নজরুল ইসলাম/এলামি)

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবএরইমধ্যে বিশ্বজুড়ে অনুভূত হচ্ছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায়, দক্ষিণ এশিয়া সবচেয়ে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত অঞ্চলগুলির মধ্যে রয়েছে। পরিবর্তিত জলবায়ুর প্রভাবের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার বিষয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বহু আলোচনা সংঘটিত হচ্ছে। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে, সার্বিক বাস্তুতন্ত্র এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে, স্থায়ীভাবে তাদের টিকিয়ে রাখতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বাভাবিক জীবন যাপন ব্যাহত হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক কূটনীতিতে, এই অপূরণীয় পরিণতিগুলি ‘জলবায়ু ক্ষয়ক্ষতি’ বা ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ নামে পরিচিত।

জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ক্ষয়ক্ষতি বা লস অ্যান্ড ড্যামেজ কী?
লস অ্যান্ড ড্যামেজ কীভাবে ভারত ও দক্ষিণ এশিয়াকে প্রভাবিত করে?
জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে দক্ষিণ এশিয়া কতটা লস অ্যান্ড ড্যামেজের সম্মুখীন?
লস অ্যান্ড ড্যামেজের বিষয়টি কেন এতটা বিতর্কিত?
লস অ্যান্ড ড্যামেজ নিয়ে প্যারিস চুক্তিতে কী বলা হয়েছে?
লস অ্যান্ড ড্যামেজের বিষয়ে কপ-২৬ কি সিদ্ধান্ত হয়েছিল?
লস অ্যান্ড ড্যামেজ মোকাবেলায় কী পরিমান তহবিল প্রয়োজন ?
লস অ্যান্ড ড্যামেজ মোকাবেলায় কপ-২৭ কতটুকু ভূমিকা রাখবে?

জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ক্ষয়ক্ষতি বা লস অ্যান্ড ড্যামেজ কী?

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলোর মধ্যে আরও ঘন ঘন এবং তীব্র বন্যা, তাপপ্রবাহ, ঝড় এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি অন্তর্ভুক্ত। যদিও এসব অনেক ক্ষয়ক্ষতির সাথে স্থানীয় বাসিন্দারা কিছু কিছু মানিয়ে নিতে পারলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এধরনের পরিবর্তনের সাথে অভিযোজন অসম্ভব: যেমন: প্রাণহানী,  বাঁধ ভেঙে যাওয়া, জমি অনুর্বর হয়ে যাওয়া, বাসস্থান স্থায়ীভাবে পরিবর্তিত হওয়া এবং গৃহপালিত গবাদি পশুর মৃত্যু। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সামাজিক ও আর্থিক প্রভাব যা একেবারেই এড়ানো যায় না তাকে ‘ক্ষতি ও ক্ষয়ক্ষতি’ বা লস অ্যান্ড ড্যামেজ বলা হয়।.

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয়ক্ষতি অর্থনৈতিক বা অ-অর্থনৈতিক হতে পারে। অর্থনৈতিক ক্ষতির মধ্যে রয়েছে মন্দা ব্যবসার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত আর্থিক ক্ষতি, যেমন ভারতে তীব্র তাপপ্রবাহের কারনে গমের ফলন হ্রাস পেয়েছে যা অনেক কৃষকের জীবন ও জীবিকাকে প্রভাবিত করেছে। এই প্রভাবের কারনে অর্থ সম্পত্তি এবং অবকাঠামোরও ক্ষতি হতে পারে, যেমন বন্যায় ঘরবাড়ি ভেসে যাওয়া। দক্ষিণ এশিয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আরও ঘন ঘন এবং গুরুতর বন্যার প্রকোপ দেখা দিয়েছে।

সরাসির অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে সম্পর্কিত নয় এমন ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে রয়েছে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, আদিবাসী জ্ঞান, জীববৈচিত্র্য এবং বাস্তুতন্ত্রের পরিষেবা যা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে হারিয়ে গেছে বা যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।

লস অ্যান্ড ড্যামেজ কীভাবে ভারত ও দক্ষিণ এশিয়াকে প্রভাবিত করে?

বিশ্বব্যাংকের তথ্য মতে, দক্ষিণ এশিয়ার ৭৫০ মিলিয়ন মানুষ গত দুই দশকে অন্তত পক্ষে একটি করে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জলবায়ু উষ্ণ হওয়ার সাথে সাথে এই বিপর্যয়গুলি আরও ঘন ঘন এবং তীব্র হতে চলেছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার জন্য সম্ভাব্য বিপুল পরিমান লস অ্যান্ড ড্যামেজের কারন তৈরি করছে।

আন্তঃসরকারি প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি) এর একাধিক প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়াকে আবহাওয়ার চরম ক্ষতির জন্য বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের উপর একটি গুরুত্বপূর্ণ  আইপিসিসি রিপোর্টে (২০২২) জোর দেয়া হয়েছে যে কীভাবে বন্যা, ঘূর্ণিঝড় এবং তাপপ্রবাহের ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতি, এবং সেই সাথে কৃষি উৎপাদনশীলতা হ্রাসের মতো ধীর গতির চলমান সংকট এই অঞ্চলকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করবে।

group of cattle in flooded area
বন্যা ও খরায় গবাদিপশুর ক্ষতি হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষতির (লস অ্যান্ড ড্যামেজ) একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ (ছবি: আমিনুল সাওন/ এলামি)

এই পরিবর্তনগুলির বিশাল সম্ভাব্য অর্থনৈতিক এবং মানবিক প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে, বিশ্ব কীভাবে লস অ্যান্ড ড্যামেজের কাটিয়ে উঠতে পারে এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিশোধ করে, তা দক্ষিণ এশিয়া এবং সমস্ত উন্নয়নশীল দেশের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু জীবন ও জীবিকা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, তাই এই অঞ্চলের দেশগুলি এবং অন্যত্র, এসব সমস্যা তাদের সমাধানসহ ভবিষ্যত ব্যাঘাতের বিরুদ্ধে প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে বিশ্বস্তরে লস অ্যান্ড ড্যামেজ নিয়ে গুরুতর আলোচনার জন্য চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে দক্ষিণ এশিয়া কতটা লস অ্যান্ড ড্যামেজের সম্মুখীন হতে পারে ?

২০১৯ সালের একটি সমীক্ষা অনুসারে, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত  ক্ষয়ক্ষতির জন্য ২০৫০ সাল নাগাদ দক্ষিণ এশিয়ায় ৫১৮  বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০৭০  সালের মধ্যে, এই সংখ্যাটি ৯৯৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত উন্নীত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

২০১৮ সালে প্রকাশিত অপর একটি সমীক্ষা অনুমান করেছে যে, ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণায়নের সাথে, ভারতের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ২০৩৭ সালের মধ্যে ২.০৯ শতাংশ এবং ২০৬৭ সালের মধ্যে ৫.৫৩ শতাংশ হ্রাস পাবে।

দক্ষিণ এশিয়া ইতিমধ্যেই চরম আবহাওয়ার ঘটনার জন্য ব্যাপক আর্থিক ব্যয়ভারের সম্মুখীন হচ্ছে: বেসরকারী সংস্থা জার্মানওয়াচের এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে ২০১৯ সালে চরম আবহাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলির মধ্যে ভারত সপ্তম স্থানে রয়েছে। এতে বলা হয় যে একই বছর ব্যাপক বন্যার কারনে প্রায় ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়, এতে প্রাণ হারায় ১৮০০ জন মানুষ এবং বাস্তুচ্যুত হয় প্রায় ১.৮ মিলিয়ন মানুষ।

প্রতি বছর, ভারত এবং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলিও গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের কারণে প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন হয়। যদিও ক্রমবর্ধমান পরিশীলিত আবহাওয়া সতর্কতার কারনে প্রাণ হারানোর সংখ্যা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে, তবুও প্রতিটি ঝড়ের সাথে ঘরবাড়ি এবং জীবিকার উৎসগুলো সবসময়ই নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। সুপার সাইক্লোন আম্ফান ২০২০ সালে ভারত ও বাংলাদেশে আঘাত হানে, এর ফলে আনুমানিক ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষতি হয় এবং ভারতে ২.৪ মিলিয়ন এবং বাংলাদেশে ২.৫ মিলিয়ন মানুষকে বাস্তুচ্যুত হতে হয়। এই ধরনের চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলি জলবায়ু উষ্ণ হওয়ার সাথে সাথে আরও গুরুতর এবং অনিয়মিত হয়ে উঠছে, ঝড়ের ধরণ পাল্টে যাবার সাথে সাথে আবহাওয়াবিদদের জন্য সময়মতো পূর্বাভাস জারি করা কঠিন হয়ে পড়ছে দিনকে দিন।

লস অ্যান্ড ড্যামেজের বিষয়টি কেন এতটা বিতর্কিত?

দায়ভার আর ক্ষতিপূরনের মতো বিষয়গুলো জোরালো থাকার কারনে লস অ্যান্ড ড্যামেজের বিষয়টির কারণে আন্তর্জাতিক জলবায়ু আলোচনায় একটি বিতর্কিত বিষয় হয়ে উঠেছে। উন্নত দেশগুলি – যারা ঐতিহাসিকভাবে শিল্প বিপ্লবের পর থেকে নির্গত গ্রিন হাউস গ্যাসের সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য দায়ী তারা যে কোনও আন্তর্জাতিক চুক্তির বিষয়ে সতর্ক ছিল যা তাদের নির্গমনের কারণে সৃষ্ট লস অ্যান্ড ড্যামেজের জন্য অর্থ প্রদানের দ্বার উন্মুক্ত রেখে যেতে পারে।

লস অ্যান্ড ড্যামেজ নিয়ে প্যারিস চুক্তিতে কী বলা হয়েছে?

২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত প্যারিস চুক্তির ৮ অনুচ্ছেদে লস অ্যান্ড ড্যামেজের উপর আলোকপাত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে, স্বাক্ষরকারী দেশগুলো “জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাবের সাথে সম্পর্কিত লস অ্যান্ড ড্যামেজ প্রতিরোধ, হ্রাস এবং মোকাবেলার গুরুত্ব” স্বীকার করে এবং তাদের জন্য প্রযোজ্য সমাধানগুলো বাস্তবায়নে সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে।”                         

প্যারিস চুক্তিতে যদিও লস অ্যান্ড ড্যামেজের বিষয়ে নিবেদিত ভাষার অন্তর্ভুক্তি এটিকে একটি আনুষ্ঠানিক প্ল্যাটফর্ম দিয়েছে, যার জন্য দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়নশীল দেশগুলো চাপ প্রয়োগ করে আসছিল। তবে এ সম্পর্কিত ভাষা বা বক্তব্য উন্নত দেশগুলির পছন্দের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে লেখা হয়েছে। প্যারিস চুক্তির পাশাপাশি গৃহীত সিদ্ধান্তের অনুচ্ছেদ ৫২  বলে: “চুক্তির ধারা ৮ কোন দায় বা ক্ষতিপূরণের জন্য কোন ভিত্তি প্রদান করে না।”

এর অর্থ হচ্ছে প্যারিস চুক্তি জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত লস অ্যান্ড ড্যামেজ মোকাবেলা করার জন্য উন্নত দেশগুলোর উপর কোন প্রকার আইনী বাধ্যবাধকতার সুযোগ রাখেনি এবং উল্লেখযোগ্য ক্ষতির সম্মুখীন দেশগুলোকে সমর্থন করার জন্য আর্থিক প্রতিশ্রুতির কোন উল্লেখও নেই সেখানে।

লস অ্যান্ড ড্যামেজের বিষয়ে কপ-২৬ কি সিদ্ধান্ত হয়েছিল?

২০২১ সালের নভেম্বরে গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত কপ-২৬ সম্মেলনে জি ৭৭ নামে পরিচিত দেশগুলোর একটি নেটওয়ার্ক এবং চীন দুর্বল দেশগুলোকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য একটি আনুষ্ঠানিক ‘সুবিধা’ স্থাপনের আহ্বান জানায়।

কবে ইইউ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য ধনী দেশগুলোর বিরোধিতার কারণে, নেতারা উন্নয়নশীল দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত লস অ্যান্ড ড্যামেজ মোকাবেলায় সহায়তা করার জন্য একটি ত্রাণ তহবিল প্রতিষ্ঠা করতে সার্বিকভাবে ব্যর্থ হয়।

 পরিশেষে, গ্লাসগোতে স্বাক্ষরিত চুক্তি, যা গ্লাসগো জলবায়ু চুক্তি নামে পরিচিত, সেখানে লস অ্যান্ড ড্যামেজ মোকাবেলায় উন্নত দেশগুলোর সহায়তার প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করে কিন্তু আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য নির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়াই তা শেষ হয়।

লস অ্যান্ড ড্যামেজ মোকাবেলায় কী পরিমান তহবিল প্রয়োজন ?

যদিও কপ-২৬ লস অ্যান্ড ড্যামেজ মোকাবেলা করতে  সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে সমর্থন করার জন্য একটি আনুষ্ঠানিক অর্থায়নের সুবিধা ছাড়াই শেষ হয়, তবে অনুন্নত দেশগুলোকে সমর্থন করার জন্য সেখান থেকে কিছু স্বাধীন প্রচেষ্টার ঘোষনা করা হয়। চিলড্রেনস ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ফাউন্ডেশনের নেতৃত্বে একদল জনহিতৈষী সংস্থা লস অ্যান্ড ড্যামেজ মোকাবেলায় আর্থিক সুবিধার জন্য তিন মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তার ঘোষণা দেয়। কপ-২৬ সম্মেলনে  বেলজিয়ামের একটি অঞ্চল ওয়ালোনিয়াও এক মিলিয়ন ইউরোর সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যেখানে স্কটল্যান্ড এক মিলিয়ন বৃটিশ পাউন্ড সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয়।

ঘোষিত সহায়তার পরিমান কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনজনিত লস অ্যান্ড ড্যামেজ মোকাবেলায় একেবারেই যৎসামান্য : ২০৩০ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তন সৃষ্ট লস অ্যান্ড ড্যামেজ মোকাবেলায় মোট ব্যয়ের পরিমান ২৯০ – ৫৮০  বিলিয়ন মার্কিন ডলার ধারনা করা হয়।

লস অ্যান্ড ড্যামেজ মোকাবেলায় কপ-২৭ কতটুকু ভূমিকা রাখবে?

এই প্রতিবেদনটি লেখার সময় প্রাপ্ত আগামী কপ-২৭ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক আলোচ্যসূচিতে লস অ্যান্ড ড্যামেজ নিয়ে কোনো এজেন্ডা অন্তর্ভূক্ত হয়নি। এই সম্মেলনটি ২০২২ সালের নভেম্বরে মিশরের শার্ম আল-শেখ-এ অনুষ্ঠিত হবে।

২০২২ সালের জুনে বন জলবায়ু সম্মেলনে লস অ্যান্ড ড্যামেজ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল, এটি কপ-২৭ এর পূর্বসূরী। সম্মেলনটি লস অ্যান্ড ড্যামেজ নিয়ে ‘গ্লাসগো সংলাপে’ আলোচনার সূত্রপাত দেখেছিল, কিন্তু এ নিয়ে অর্থায়ন সুবিধার দিকে যথার্থ কোনো পদক্ষেপ গ্রহন ছাড়াই শেষ হয়।

যাইহোক, কপ-২৬ সম্মেলন এবং বন সম্মেলনের ফলে এ সংক্রান্ত আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে একটি গতি তৈরি করেছে এবং আন্তর্জাতিক জলবায়ু কূটনীতির মূল অংশ হিসাবে লস অ্যান্ড ড্যামেজের মতো বিষয়টি আরো জোরদার হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন মোর্শেদা আক্তার)

Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.

Strictly Necessary Cookies

Strictly Necessary Cookie should be enabled at all times so that we can save your preferences for cookie settings.

Analytics

This website uses Google Analytics to collect anonymous information such as the number of visitors to the site, and the most popular pages.

Keeping this cookie enabled helps us to improve our website.

Marketing

This website uses the following additional cookies:

(List the cookies that you are using on the website here.)