শক্তি

বাংলাদেশের জন্য বিরাট সম্ভাবনা এখন সোলার বাতি

Bangladesh is the first country to get UN climate funds to install home solar energy systems in villages off the electricity grid
বাংলা
<p>Photo by Joydeep Gupta</p>

Photo by Joydeep Gupta

জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিড থেকে আর বিদ্যুৎ নয়, দেশের গ্রামাঞ্চলে বাড়িঘরে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্থাপন করে বিদ্যুতেরে চাহিদা মেটাতে প্রথম দেশ হিসেবে জাতিসংঘ তহবিল পেয়েছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগে বঙ্গোপসাগরের বুকে অবস্থতি একটি দ্বীপের নাম সন্দীপ। সৌর বাতি বা সোলার ল্যাম্পের কথা জানতে চাইলে উচ্ছ্বাসের সঙ্গে ওই দ্বীপে বাস করা গৃহবধু মোমনো বেগম বললেন, ‘আমাদের জন্য এটি এক নতুন সময়। সোলার ল্যাম্প আজ আমাদের জীবনটাই বদলে দিয়েছে।

‘আমরা এখন রাতের বেলায়ও অনেক কাজ করতে পারি। এখন রাতের বেলায় নকশী কাঁথা (বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী হাতে বুনোনো কাঁথা) সেলাই করতে আমার কোনো সমস্যা হয় না। প্রতিবেশীদের মধ্যে অনকেই আবার বেতের ঝুড়ি বানানোর কাজ করছেন রাতে’  – বলছিলেন  দ্যথার্ডপোল.নেট এর কাছে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে এমনটাই বলেন মোমনো বেগম।

শহরের ঝলমলে আলো থেকে অনেক দুরে অবস্থিত এসব গ্রাম। এখানে কেরোসিন বাতির স্বল্প আলোয় কাঁথা সেলাই কিংবা হাতে বুনোনো অনকেটাই অসম্ভব। সোলার ল্যাম্পের কল্যানে এসব গ্রামে আজ আলোর ছ¦টা এসে পড়েছে। এখন ঘরে বাতি জ্বালাতে মোমেনা বেগমের আর মাসে ছয় লিটার কেরোসিন তেলের দরকার হয় না। গত কয়কে মাসে মোমনোর বাড়ির মতো বাংলদেশের প্রায় ৪০ লাখ বাড়ি রাতের বেলায় আলোকিত হয় সোলার ল্যাম্পের কল্যানে। বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যার মোট জনসংখ্যার (১৬০ মলিয়িন) প্রায় ৪০% জনগন বিদ্যুত  সুবিধার বাইরে রয়ে গেছে এখনও। এ অবস্থায় সোলার ল্যাম্প এখন নতুন স্বপ্নের পথ  দেখাচ্ছে।

আসুক আলো, হোক সমৃদ্ধি

হঠাৎই – তবে স্বন্তর্পনে ঘটে যাওয়া এই আলো বিপ্লব বাংলাদশেকে নিয়ে গেছে অন্য এক আসনে। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে বাংলাদশে এখন জাতিসংঘের ‘ক্লিন ডেভেলপমেন্ট মেকানিজম (সিডিএম)’ এর আওতায় সারাবিশ্বে প্রথম দেশ হিসেবে আর্থিক সহায়ত পেয়েছে। চলতি মাসে জাতিসংঘ (ইউনাইটেড নেশনস ফ্রেমওয়ার্ক কনভনেশন অন ক্লাইমটে চেঞ্জ) বাংলাদেশের দু’টি সংস্থাকে সিডিএম’র আওতায় ৩৯৫,২৮৬ র্কাবন ক্রেডিট প্রদান করেছে যার র্অথ মূল্য ৩.৫৬ মিলিয়ন ইউরো।

২০০৭ সালে আমরা এক গবেষনায় দেখেছি যে একটি পরিবারে মাসে ছয় থেকে আট লিটার কেরোসিন প্রয়োজন হয়। দ্যর্থাডপোলক.নেটকে এ তথ্য জানান বাংলাদেশের ইনফ্রাষ্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড-এর (আইডিসিওএল) পরিচালক নাজমূল হক। বাংলাদেশের যে দু’টি সংস্থা জাতিসংঘের ক্রেডিট পেয়েছে তার মধ্যে আইডিসিওএল একটি। নাজমূল আরো বলনে, ‘আমরা যহেতেু এরই মধ্যে চার মিলিয়ন বাড়তি সোলার প্যানলে স্থাপন করে দিয়েছি, আমরা মনে করছি এই প্রকল্পের মধ্য দিয়ে প্রতিমাসে ৩২ হাজার লিটার কেরোসিন তেলের সাশ্যয় হবে।’

সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে এক মেট্রিক টন কেরোসিন পোড়ালে তার থেকে ২.৪৫  মেট্রিক টন র্কাবন নি:সরণ হয়। কেরোসিন বাতির পরবর্তী সোলার ল্যাম্প ব্যবস্থা চালু হলে বছরে ৪৮৮,০০০ টন র্কাবন নি:সরণ বন্ধ করা যাবে। সরকারের পক্ষ থেকে আইডসিওএল সারাদেশে ৬৫ হাজার সোলার প্যানলে স্থাপন করতে যাচ্ছে। এতে সহায়তা করছে দেশের আরো প্রায় আরো ৪৭টি স্থানীয় প্রতিষ্ঠান।

জাতিসংঘের র্কাবন ক্রেডিট পাওয়া বাংলাদেশের অপর সংস্থার নাম গ্রামীন শক্তি। নোবেল বিজয়ী র্অথনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূস প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটি র্দীর্ঘদিন থেকে বাংলাদেশে বাড়ি বাড়ি  সোলার প্যানলে স্থাপনে কাজ করে আসছে।

ইউএনএফসিসিসি  ১৯৯৭ সালে কিয়োটো প্রটোকলের আওতায় চালু করে ক্লিন ডেভেলপমেন্ট মেকানিজম বা সিডিএম। এর মাধ্যমে শিল্প-কারখানাসমৃদ্ধ দেশগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাছ থেকে কার্বন ক্রেডিট ক্রয় করবে যার মধ্য দিয়ে র্কাবন নি:সরণ কমিয়ে আনা যায়। বিশ্বের  অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ র্কাবন নি:সরনে সবচেয়ে কম ভূমিকা রাখে। প্রতিবছর বাংলাদেেশ র্কাবন ন:িসরনরে হার  জনপ্রতি ০.০০১৩ টন। ক্লিন ইলেকট্রিসিটি বা সাশ্রয়ী ও বিশুদ্ধ বিদ্যুত ব্যবস্থা প্রচলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এখন অর্থ উপার্জন করতে পারে।

অনুন্নত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ কার্বন ক্রেডিট পেল। এই প্রক্রিয়ায় বিশ্বব্যাংক প্রথমে কারিগরি সহায়তা প্রদান করে এবং এর মাধ্যমে আইডিসিওএল ও গ্রামীন শক্তির কাছ থেকে ক্রেডিট ক্রয় করে। বাংলাদেশকে ইউএনএফসিসিসি’র দেয়া মোট র্কাবন ক্রেডিটের (সিএআর বা সার্টিফায়েড এমিশন রিকাডশন) ৫৪% পেয়েছে আইডিসিওল ও ৪৬% পয়েেেছ গ্রামীন শক্তি। সংস্থা দুটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। এ দু’টি সংস্থার সাথে ২০০৭ সালে হওয়া  চুক্তি অনুযায়ি বিশ্বব্যাংক প্রতি সিইআর নয় ইউরোতে বিক্রি করবে।

আইডিসিওএল’র পরিচালক নাজমূল হক বলেন, ২০০৭ সালে আমাদের সঙ্গে র্কাবন ক্রেডিট ক্রয় সংক্রান্ত চুক্তি সই হয় বিশ্বব্যাংকের সাথে। ২০১২ সালে এই র্কমসূচি ইউএনএফসিসিসি’র অধিভূক্ত হয়। তিনি বলেন, যদিও বর্তমানে প্রতি সিইআর-এর মূল্য এক ইউরোর নিচে কিন্তু বাংলাদেশ ২০০৭ সালের নির্ধারিত হারেই মূল্য পাবে, কারন এই চুক্তিটি সেসময় হয়েছিল। বাংলাদেশের পওে সেনেগাল ও ভারত এই তালিকায় রয়েছে বলে জানান গ্রামীন শক্তির সাবেক কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম।

ইতিবাচক নীতি, নেতিবাচক বাস্তবায়ন

২০০৮ সালে নবায়নযোগ্য জ্বালানী,  যেমন সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পে উৎসাহিত করতে একটি নীতি প্রনয়ন করে বাংলাদেশ সরকার। এই নীতির আওতায় সরকার সেসময় ঘোষনা করেছিল যে ২০১৫ সালের মধ্যে দেশের মোট চাহিদার ৫% ও ২০২০ সালের মধ্যে ১০% বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে উৎপন্ন করা হবে। বর্তমানে এই হার মাত্র ২.৫% অর্থাৎ মূল লক্ষ্যমাত্রা থেকে এখনও অনেক পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ সরকার। এ মুহুর্তে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা ১০,৩৪১ মেগাওয়াট, যদিও সর্বোচ্চ উৎপাদন হয় মাত্র ৭, ৩৫৯ মেগাওয়াট।

 

 

 

Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.

Strictly Necessary Cookies

Strictly Necessary Cookie should be enabled at all times so that we can save your preferences for cookie settings.

Analytics

This website uses Google Analytics to collect anonymous information such as the number of visitors to the site, and the most popular pages.

Keeping this cookie enabled helps us to improve our website.

Marketing

This website uses the following additional cookies:

(List the cookies that you are using on the website here.)