কোলকাতা হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ সম্প্রতি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অযোধ্যা পাহাড়ে একটি এক হাজার মেগাওয়াট পানি বিদ্যুৎ প্রকল্প চালুর বিষয়ে সবুজ সংকেত দেয়ার পর সেখানে বসবাসরত আদীবাসি সম্প্রদায়গুলো তাদের জীবন-জীবিকা হারানোর আশংকা করছে।
২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে দেয়া সেই রায়ের মধ্য দিয়ে ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইলেকট্রিসিটি ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডব্লিউবিএসইডিসিএল) জমির অধিকারের বন্দোবস্ত সম্পন্ন করে, তুরগা পাম্পড স্টোরেজ প্রকল্পের নির্মাণের সার্বিক অনুমতি পায়। প্রকল্পটি পূর্ব ভারতের পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড সীমান্তে অযোধ্যা পাহাড়ের বাঘমুন্ডি এলাকার, ছোটনাগপুর মালভূমির অংশে নির্মিত হতে যাচ্ছে।
দুটি বাঁধের পিছনের অংশের জলাধারগুলোর কারেন পার্শ্ববর্তী কৃষি খামার এবং চারণভূমি সহ ২৯২ হেক্টর জমি তলিয়ে যাবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। ২০১৬ সালে প্রকাশিত প্রকল্পটির পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন প্রতিবেদন অনুসারে, এই অঞ্চলটির মোট এলাকার ২৩৪ হেক্টর বন বিভাগের অন্তর্গত, আর ৫৮ হেক্টর জমি বর্তমানে রাজস্ব বিভাগের আওতাধীন বা ব্যক্তি মালিকানায় রয়েছে।
WBSEDCL ওয়েবসাইট এর তথ্য মতে প্রকল্পটি “২০২২ সালের পরে রাজ্যের সান্ধ্যকালীন সর্বোচ্চ [বিদ্যুৎ] ঘাটতি মেটাতে” চালু করা প্রয়োজন (যেহেতু পরিবর্তনশীল চাহিদা মেটাতে কয়লা কেন্দ্রগুলিকে দ্রুত বাড়ানো যাচ্ছে না)। কিন্তু এই প্রকল্পটি স্থানীয় জনগণের মধ্যে মারাত্বক শংকা তৈরি করেছে। এলাকাটি অযোধ্যা এবং বাঘমুন্ডি এলাকার ৩৬টি গ্রাম নিয়ে গঠিত। এখানকার বাসিন্দাদের অধিকাংশই আদিবাসী সম্প্রদায়ের সদস্য। গ্রামবাসীরা তাদের চারণভূমি এবং পার্শ্ববর্তী বনাঞ্চল ক্ষতিগ্রস্থ্য হবার আশংকায় ২০১৭ সাল থেকে এই প্রকল্পের প্রতিবাদ করে আসছে।
কোলকাতার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলের অধ্যাপক সৌমেন্দু চ্যাটার্জির মতে, এই প্রকল্প চালু হলে পাহাড়ের অপেক্ষাকৃত নিম্নাঞ্চলে পানির ঘাটতি আরও বেশি প্রকট আকার ধারণ করতে পারে।
একটি পাম্প করা স্টোরেজ প্ল্যান্ট হল একটি বিপরীত পানি বিদ্যুৎ সুবিধা যা চাহিদা বেড়ে গেলে তা মোকাবেলায় যাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় সেই লক্ষ্যে জন্য নির্মান করা হয়। এর মূল উদ্দেশ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন নয়, বরং বিদ্যুৎ গ্রিডকে স্থিতিশীল করা। এটির বিভিন্ন উচ্চতায় দুটি জলাধার থাকে। “বিদ্যুতের চাহিদা কম হলে, একটি পাম্প করা স্টোরেজ প্ল্যান্ট নিচু থেকে উপরের জলাধারে পানি পাম্প করতে [অতিরিক্ত] বিদ্যুৎ ব্যবহার করে। যখন বিদ্যুতের প্রয়োজনীয়তা বেশি হয়ে যায়, তখন উপরের জলাধারের পানি টারবাইন চালানোর জন্য এবং বিদ্যুৎ উৎপন্ন করার জন্য নামিয়ে দেওয়া হয়”। বিষয়টি নিয়ে এভাবেই ব্যাখ্যা করেছেন বেসরকারী থিঙ্ক ট্যাঙ্ক মন্থন অধ্যয়ন কেন্দ্রের শ্রীপাদ ধর্মাধিকারী।
তুরগা পাম্পড স্টোরেজ প্রকল্পের অম্ল ইতিহাস
১৯৮০-এর দশকে প্রথমবারের মতো আলোচনায় আসা তুরগা পাম্পড স্টোরেজ প্রকল্পটি প্রাথমিকভাবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০১৭ সালের মে মাসে অনুমোদন দেয়। এটি কোলকাতা হাইকোর্টের একটি একক বিচারকের বেঞ্চে ২০১৯ সালের জুলাইয়ে এক রায়ের দ্বারা স্থগিত করা হয়, যাতে মূলত জমি অধিগ্রহণের বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এই প্রকল্পটির জন্য জমি অধিগ্রহনের ক্ষেত্রে ২০০৬ সালের বন অধিকার আইনের (এফআরএ) লঙ্ঘন করা হয়। এফআরএ অনুয়ায়ী যে কোনো প্রকল্প শুরু করার আগে বন ও পরিবেশগত ছাড়পত্রের জন্য স্থানীয়দের কাছ থেকে লিখিত সম্মতি নেয়া বাধ্যতামূলক।
পুরুলিয়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অফিস থেকে২০১৭ সালের একটি নথি অনুসারে, ডব্লিউবিএসইডিসিএল ৩৬টি গ্রামে বসবাসকারী ৩১,০০০ এর বেশি অধিবাসীর মধ্য থেকে মাত্র ২১টি সম্মতি পত্র দাখিল করে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০১৯ সালের জুলাই মাসে এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে এবং কোলকাতা হাইকোর্টের একটি বৃহত্তর বেঞ্চ ২০২১ সালের ডিসেম্বরে এই আপিলটি বহাল রেখে বলেছিল যে এই প্রকল্পটি “১৬৯ জনের জন্য স্থায়ী/নিয়মিত কর্মসংস্থান এবং ১৮,৯০,০০০ জনের জন্য অস্থায়ী কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারবে”। বেঞ্চটি আগের রায়টিকে “পাশে রেখে” শেষ করেছে। এটি বলেছে যে আগের রায়টি প্রকল্পের আশেপাশের “ভৌগোলিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং প্রাকৃতিক তথ্য” “বিকৃত” করেছে। ডিভিশন বেঞ্চ ২০০৬ সালের বন অধিকার আইন এবং ১৯৭৩ সালের পশ্চিমবঙ্গ পঞ্চায়েত আইন অনুসারে ‘গ্রাম সভা’র (গ্রাম পরিষদ) বিষয়টি তুলে ধরে বলে যে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্তৃপক্ষ দ্বারা “গ্রামসভার সম্মতির বিষয়টি এখনও যাচাই-বাছাইয়ের জন্য উন্মুক্ত”।
তুরগা প্রকল্প নিয়ে আবারও আদালতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে স্থানীয় গ্রামবাসী
এই প্রকল্পটি দ্বারা সম্ভাব্য ক্ষিতর শিকার এমন ৩৬টি গ্রামের বাসিন্দারা এখন পরিবেশকর্মীদের সাথে নিয়ে প্রকৃতি বাঁচাও ও আদিবাসী বাঁচাও মঞ্চ (প্রকৃতি ও আদিবাসীদের বাঁচাতে ফোরাম) নামে একটি ফোরাম গঠন করেছে। তারা হাইকোর্টের দেয়া সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করার উদ্দেশ্যে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে।
এই ফোরামের সদস্য গুলান মুর্মু অভিযোগ করে বলেন, প্রস্তাবিত তুরগা প্রকল্পের জন্য ৩০০,০০০ গাছ কাটা হবে৷ “প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ৫০০ টিরও বেশি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দ্য থার্ড পোলকে তিনি বলেন, এর মধ্য দিয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে আমাদের প্রকৃতি। তিনি আশংকা প্রকাশ করে বলেন, এখানকার স্থানীয় লোকেরা, বেশিরভাগই বনে বসবাসকারী আদিবাসী সম্প্রদায়। তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য, ঔষধি গাছের জন্য এবং বাঁশ ও শুকনো ডালপালার জন্য তাদের সবাইকে বনের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করতে হয়। জঙ্গলে গবাদি পশু চারণ এবং জ্বালানী কাঠ সংগ্রহ করতেও তারা এ্ই বনভূমি ব্যবহার করে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার ১৯৮০ সাল থেকে অযোধ্যা পাহাড়ে চারটি পাম্প করা পাওয়ার স্টোরেজ প্ল্যান্ট তৈরি করার পরিকল্পনা করে। তুরগা প্রকল্পটি সিরিজের দ্বিতীয়, পুরুলিয়া পাম্পড স্টোরেজ প্রজেক্ট (পিপিএসপি), একই জেলায় একটি ৯০০ মেগাওয়াট পাম্পযুক্ত জলবিদ্যুৎ প্রকল্প যা ২০০৭ সালে সম্পন্ন হয়। সেই প্রকল্পের ফলে ৪৪২ হেক্টর জমিতে বন্যা হয়।
রাজ্য সরকার তুরগা প্রকল্পের জন্য জাপান সরকারের প্রধান বিদেশী উন্নয়ন সংস্থা, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি থেকে ২৯,৪৪২ মিলিয়ন জাপানিজ ইয়েন (২৪০.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) ঋণ নিয়েছে।
অষ্পষ্ট প্রতিশ্রুতি জন্ম দেয় অবিশ্বাসের
“এটা আমাদের বেঁচে থাকার প্রশ্ন,” মুর্মু বলেন৷ “উন্নয়নের নামে পরিবেশের এই ধ্বংসলীলা চলতে পারে না। পিপিএসপির জন্য আমাদের অনেক জমি পানির নিচে চলে গেছে। আমরা এটা আবার হতে দিতে পারি না।”
পিপিএসপি উন্নয়নের আগে প্রতিশ্রুত যেসব সুবিধার কথা বলা হয়েছিল তার স্মৃতি এখন তুরগা প্রকল্পের কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশংকা করা বাসিন্দাদের কাছে এখনও দগদগে ঘাঁয়ের মতো।
অযোধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের রাঙ্গা বেরেলহোর গ্রামের বাসিন্দা ছবি টুডু দ্য থার্ড পোলকে বলেন, “পিপিএসপি চলাকালীন তারা [ডব্লিউবিএসইডিসিএল এবং সরকারি কর্মকর্তারা] প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে আমরা বিনামূল্যে বিদ্যুৎ পাব এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কাজ করব। অথচ এটি নির্মাণের পর, আমাদের গ্রামের মাত্র তিনজনকে নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এখন তারা আবার [তুরগা প্রকল্প নিয়ে] একই ধরনের কথা বলছেন।
তুরগা প্রকল্পের সংশ্লিষ্টরা যারা বন ছাড়পত্রের অনুমতির জন্য ২০১৪ সালে আবেদন করেছিলেন তাতে দাবী করা হয়েছিল যে এই প্রকল্পের মাধ্যমে ১৬৯ জনের স্থায়ী কাজের সুযোগ হবে এবং অস্থায়ী কর্মীদের জন্য ১.৮৯ মিলিয়ন ‘ব্যক্তি-দিনের কর্মসংস্থান তৈরি করবে।
“আমরা পিপিএসপি থেকে আমাদের যা শেখার শিখেছি। চাকরির কথা ভুলে যান, তারা আমাদের ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হলে আমরা টাকাও নেব না,” পাঁচ সন্তানের মা টুডু বলেন। “আমরা আমাদের বনভূমি কোনো মূল্যেই তাদের হাতে তুলে দেব না।” তিনি দাবি করেন তুরগা প্রকল্প নির্মিত হলে তার পারিবারিক খামারটি তলিয়ে যাবে।
টুডুর প্রতিবেশী কালীরাম বলেন: “পানি একেবারেই বাড়ির আমাদের দোরগোড়ায় পৌছে যাবে। আমি আমার গবাদি পশু, শূকর ও ভেড়া তখন চরাতে কোথায় নিয়ে যাব? পিপিএসপি আমাদের চোখ খুলে দিয়েছিল। সেসময় এত মানুষ জমি হারিয়েছে, আর বিনিময়ে তারা কিছুই পায়নি।”
রাজ্য সরকার প্রকল্পের জন্য পরিবেশ ও বন ছাড়পত্র নেওয়ার আগে আইন অনুযায়ী কাজ করেনি বলে বাসিন্দাদের অভিযোগের জবাবে পরিচয় প্রকাশে অস্বীকৃতি জানানো একজন স্থানীয় কর্মকর্তা দ্য থার্ড পোলকে বলেন, “এইরকম একটি প্রকল্প হাতে নেওয়ার আগে দুটি উপায়ে – পঞ্চায়েত আইন অনুসরণ করে বা এফআরএ-এর অধীনে, গ্রাম সভাগুলি এখানে করা যেতে পারে। আমি মনে করি, কেন্দ্রীয় সরকারও অনুমোদন দিয়েছে যে পঞ্চায়েত আইনের গ্রামসভায় কোনও ভুল নেই। আমি শুধু বলতে পারি যে গ্রাম সভা পরিচালনা করার পরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ইআইএ [পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন] রিপোর্ট তৈরি করেছিল। এতে যদি বেআইনি কিছু থাকত তাহলে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ একক বেঞ্চের সিদ্ধান্তকে বাতিল করত না। হাইকোর্ট যখন বলেছে যে রাজ্য সরকার কোনও অন্যায় করেনি, আমি কীভাবে অন্য কিছু বলব?
পাম্প করা হাইড্রো প্রকল্পের অর্থনৈতিক লাভ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিশেষজ্ঞরা
তুরগা প্রকল্পের প্রতিশ্রুত সুবিধা আসলেই মিলবে কিনা তা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের পাম্প করা হাইড্রো প্রকল্প বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা নানা প্রশ্ন তুলেছেন। পুরুলিয়া পাম্পড স্টোরেজ প্রকল্পের ২০১০ সালের একটি গবেষণাপত্রে, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিষেক চক্রবর্তী এবং প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌমেন্দু চ্যাটার্জি বলেন, পিপিএসপি দ্বারা উৎপন্ন বার্ষিক সুবিধা (আইএনআর ৮৭২.৭ কোটি বা ১১৫.৭ মিলিয়ণ মার্কিন ডলার অর্থমূল্যের প্রকল্পের বার্ষিক ব্যয় (আইএনআর) থেকে ছয় গুণ কম। তখন ৫,৮১৯.৬ কোটি টাকা বা ৭৭২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সামাজিক ও পরিবেশগত খরচ বিবেচনা করা হয়েছিল, যার মধ্যে রয়েছে কৃষিজমি এবং জ্বালানী কাঠ, মহুয়া ফুল এবং বন উজাড়ের ফলে মধুর ক্ষতি।
সৌমেন্দু চ্যাটার্জি বলেন এখন তুরগা প্রকল্পের ফলে যে অর্থনৈতিক লাভ হতে পারে তা স্থানীয় মানুষ এবং এই অঞ্চলের বাস্তুসংস্থান দীর্ঘমেয়াদে টিকিয়ে রাখার ক্ষতির চেয়ে অনেক কম হবে। তুর্গার মতো নদীগুলো শুধুমাত্র বর্ষাকালেই প্রবল প্রবাহ দেখতে পায়। বছরের বাকি সময়, পানির স্তর খুব কম থাকে কারণ পুরুলিয়া সাধারণভাবে একটি খুব শুষ্ক অঞ্চল। পিপিএসপির মতো, পানি সঞ্চয় করার ফলে, তুরগা এবং অন্যান্য প্রকল্পগুলি উতরাই এলাকায় পানির ঘাটতি সৃষ্টি করবে।” তিনি আরো মনে করেন যে ভবিষ্যতে প্রকল্পের নিচের দিকে কৃষিকাজ করা খুব কঠিন হতে পারে।
তুরগা প্রকল্পের ফলে যে অর্থনৈতিক লাভ হতে পারে তা স্থানীয় মানুষ এবং এই অঞ্চলের বাস্তুসংস্থান দীর্ঘমেয়াদে টিকিয়ে রাখার ক্ষতির চেয়ে অনেক কমসৌমেন্দু চ্যাটার্জি, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়
ডব্লিউবিএসইডিসিএল পিক আওয়ারে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে পশ্চিমবঙ্গে এই ধরনের প্রকল্পগুলির পক্ষে পরামর্শ দিচ্ছে। তারা দাবি করছে যে পাম্প করা পাওয়ার স্টোরেজ প্রকল্পগুলি কয়লা-চালিত পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ এবং বারবার চালু করার ফলে “শিল্প সরঞ্জামের ক্ষতি” হ্রাস করে৷ বেসরকারী থিঙ্ক ট্যাঙ্ক মন্থন অধ্যয়ন কেন্দ্রের শ্রীপাদ ধর্মাধিকারী মনে করেন যে বিদ্যুতের চাহিদার ওঠানামা কয়লা-চালিত প্ল্যান্টের সরঞ্জামগুলির জন্য হুমকি হতে পারে। “বিদ্যুতের চাহিদা [সন্ধ্যায়] বাড়ে এবং কয়েক ঘন্টা পরে কমে যায়। সুতরাং, উৎপাদন ক্ষমতা খুব দ্রুত উপরে বা নিচে আনা প্রয়োজন। এটি একটি কয়লা প্ল্যান্টের সরঞ্জামের সার্বিক অবস্থা হুমকির মধ্যে ফেলে, “তিনি বলেন।যাইহোক, ধর্মাধিকারি একটি পাম্পযুক্ত জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র দ্বারা সৃষ্ট সাইট-নির্দিষ্ট হুমকির কথা উল্লেখ করেছেন।
“একটি পাম্প করা পাওয়ার স্টোরেজ প্ল্যান্ট সাধারণত পাহাড়ি এলাকায় তৈরি করা হয় যেখানে বাস্তুতন্ত্র খুবই সংবেদনশীল। তারপর রয়েছে ভূমি অধিগ্রহণ এবং মানব স্থানচ্যুতির মতো বিষয়গুলোর ভিন্ন ভিন্ন প্রভাব। এই প্রকল্পগুলি জলজ উদ্ভিদ এবং প্রাণীজগতের উপরও মারাত্মক প্রভাব ফেলে।”
এই প্রতিবেদক মন্তব্যের জন্য ডব্লিউবিএনইডিসিএল কর্মকর্তাদের এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেছেন কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া পাননি। সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেলে এই প্রতিবেদনটিতে তা সঙ্গে সঙ্গে যুক্ত করা হবে।