জলবায়ু

‘আমাদের পুরাতন ভবনগুলোকে আরো শীতল করতে হবে’,  বাংলাদেশের চিফ হিট অফিসার

দেশের প্রাকৃতিক সবুজ পরিবেশ পুনরুদ্ধারসহ জলাশয়গুলোকে সংরক্ষণে আমাদের ব্যাপক সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করতে হবে বলে মনে করেন বুশরা আফরিন
বাংলা
<p><span style="font-weight: 400;">চলতি</span> <span style="font-weight: 400;">বছরের</span> <span style="font-weight: 400;">এপ্রিলে</span> <span style="font-weight: 400;">ভয়াবহ</span> <span style="font-weight: 400;">তাপদাহের</span> <span style="font-weight: 400;">সময়</span> <span style="font-weight: 400;">বাংলাদেশের</span> <span style="font-weight: 400;">ঢাকার</span> <span style="font-weight: 400;">বাসাবো</span> <span style="font-weight: 400;">মন্দির</span> <span style="font-weight: 400;">থেকে</span> <span style="font-weight: 400;">লাইনে</span> <span style="font-weight: 400;">দাড়িয়ে</span> <span style="font-weight: 400;">খাবার</span> <span style="font-weight: 400;">পানি</span> <span style="font-weight: 400;">সংগ্রহ</span> <span style="font-weight: 400;">করছেন</span> <span style="font-weight: 400;">স্থানীয়</span> <span style="font-weight: 400;">নারীরা</span><span style="font-weight: 400;"> (</span><span style="font-weight: 400;">ছবি</span><span style="font-weight: 400;">: </span><span style="font-weight: 400;">হাবিবুর</span> <span style="font-weight: 400;">রহমান</span><span style="font-weight: 400;"> / </span><span style="font-weight: 400;">এলামি</span><span style="font-weight: 400;">)</span></p>

চলতি বছরের এপ্রিলে ভয়াবহ তাপদাহের সময় বাংলাদেশের ঢাকার বাসাবো মন্দির থেকে লাইনে দাড়িয়ে খাবার পানি সংগ্রহ করছেন স্থানীয় নারীরা (ছবি: হাবিবুর রহমান / এলামি)

সমাজকল্যাণ নির্বাহী বুশরা আফরিনকে ২০২৩  সালের মে মাসে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের মোকাবেলায় অভিজোযন বৃদ্ধির প্রয়াসে অ্যাড্রিয়েন আরশট-রকফেলার ফাউন্ডেশন রেজিলিয়েন্স সেন্টারের একটি প্রোগ্রামের অংশ হিসাবে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার (উত্তর) ‘চীফ হিট অফিসার’ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। 

আফরিন বিশ্বের ছয়জন ‘চীফ হিট অফিসার’ (সিএইচও) এর মধ্যে একজন যারা তীব্র তাপদাহসৃষ্ট প্রতিক্রিয়াগুলো মোকাবেলায় নগর সরকারগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করে থাকেন। 

চলতি বছর এশিয়ার বেশ কয়েকটি শহরে অসহনীয় তাপপ্রবাহ অনুভূত হয়। ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন সংস্থার মতে, “জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় তীব্র তাপদাহ বৃদ্ধির সম্ভাবনা ৩০ গুণ বেশি এবং সার্বিক তাপমাত্রা এক ডিগ্রি সে.  বাড়তে পারে।” 

তীব্র তাপদাহ মোকাবেলায় চলতি বছর বাংলাদেশকে হিমশিম খেতে হয়। বন্ধ রাখা হয় দেশের সকল স্কুল। আর এতে প্রায় ৩০ মিলিয়ন শিশুর শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। 

উত্তর ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের কন্যা হওয়ায় আফরিনের কার্যতক্রম বেশ কিছু সমালোচনার জন্ম দেয়। 

যেমন শহরের বিভিন্ন এলাকায় তাপ মোকাবেলায় তার কৌশলগুলো ব্যর্থ হয়েছে বলে অনেকে মন্তব্য করেন। এছাড়াও তার কৌশলগুলো বাস্তবায়নে সরকারি সংস্থাগুলোর সাথে সমন্বয়ের ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে বলেও  মনে করেন অনেকে। ঢাকার মতো শহরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি মোকাবেলায়  চিফ হিট অফিসার হিসেবে নিজের দায়িত্ব, কর্মকৌশল এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার বিষয়গুলো জানতে বুশরা আফরিনের সাথে কথা হয় ডায়ালগ আর্থের। তার সেই সাক্ষাতকারের সম্পাদিত অংশগুলো তুলে ধরা হলো।

ডায়ালগ আর্থ: আপনার দায়িত্ব এবং কাজের পরিসর সম্পর্কে  কিছুটা আলোকপাত করুন?

বুশরা আফরিন: ঢাকা উত্তরের চিফ হিট অফিসার (সিএইচও) হিসেবে আমার কাজ হচ্ছে প্রচণ্ড গরমের প্রভাব থেকে জনগণকে রক্ষা করা। এর মধ্যে রয়েছে তাপ-সম্পর্কিত ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, তাপপ্রবাহের শ্রেণীকরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন, এবং এই ঝুঁকিগুলি হ্রাসের ক্ষেত্রে সব ধরনের কার্যক্রমের সমন্বয়সহ এবংবৃক্ষ রোপনের মাধ্যমে নগরীর পায়ে হাটার রাস্তা এবং বাড়ির ছাদগুলোকে শীতল করে তোলার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করা।

Bushra Afreen, North Dhaka's chief heat officer
বুশরা আফরিন, উত্তর ঢাকার ‘চিফ হিট অফিসার’ (ছবি: চিফ হিট অফিসারের কার্যালয়)

আপনার মেয়াদে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল?

প্রথম বছরে আমি মূলত আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়াগুলো বোঝার চেষ্টা করেছি। পাশাপাশি আমাদের বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম আরো দ্রুত কিভাবে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে সে ব্যাপারে কৌশল প্রনয়নে মনোযোগ দিয়েছি। ঢাকার শাগুফতা হাউজিং এবং মিরপুর সিরামিকের মতো এলাকা গুলোতে আমাদের  সচেতনতা বৃদ্ধির কাজগুলো অব্যাহত ছিল। এসব জায়গায় আমরা ৫,০০০ টিরও বেশি চারা রোপণ করেছি।

সবারঢাকা অ্যাপে আবহাওয়ার পূর্বাভাসের তথ্য  যুক্ত করার জন্য আমরা বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের সাথে একটি সমঝোতা স্মারক চূড়ান্ত করছি [ এই অ্যাপটি সিটি কর্পোরেশন পরিচালনা করবে যাতে ঢাকার বাসিন্দারা তাপমাত্রার  কারনে মানুষের স্বাস্থ্যের উপরে কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে সে সেম্পর্কে জানতে পারবে। 

আমাদের পরামর্শমূলক বিভিন্ন উদ্যোগ স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনায় রূপান্তরিত হয়েছে। বিশেষ করে ‘জিরো সয়েল’ উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা বৃক্ষ রোপণের কর্মসূচি শুরু করে দিয়েছি। এছাড়াও আগামী জুন মাস থেকে শুরু হবে হিট  অ্যাকশন উইক যার মাধ্যমে আমরা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রভাব মোকাবেলায় অভিযোজন বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। আগামী ২৭  জুন থেকে আমরা একটি জরিপের কাজ শুরু করছি। এছাড়া হিট উইকের দ্বিতীয় পর্বটি শুরু হবে জুলাই মাসে। এই পর্যায়ে আমরা কাজ করবো খাবার পানি এবং স্যানিটেশন নিয়ে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে নগরীর সব ভবনে ওয়াশ ব্যবস্থা (পানি, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধি) নিশ্চিত করা। 

আমি ঢাকা ওয়াশা এবং ড্রিংকওয়েলের সাথে যুক্ত হয়ে একটি নগরীতে বিভিন্ন যানবাহন ব্যবহারকারী যাত্রী ও শ্রমিকদের বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করছি। এছাড়াও তীব্র তাপ প্রবাহকে একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার লক্ষ্যে সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাথে কাজ করছি। আমরা চেষ্টা করছি ঘূর্ণিঝড়ের মতোই যাতে সুনির্দিষ্ট তাপপ্রবাহের নামকরণ করা যায়।

তাপপ্রবাহ মোকাবেলায় কোন দীর্ঘমেয়াদী বিকল্পগুলি নেওয়া উচিত?

ঢাকার একটি বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ‘আরবান হিট আইল্যান্ড’ (ইউএইচআই)  সংক্রান্ত সমস্যা। এটি ঘটার মূল কারণ হচ্চে দূষণ এবং কংক্রিট ও অ্যাসফল্টের বিস্তার যা নগরীর সবুজ এলাকা ধ্বংস করে গড়ে উঠে এবং এক ধরনের ফাঁদের মতো তৈরি করে যাতে নির্দিষ্ট সেসব স্থানে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। এসব কারনে দিনের বেলা তাপমাত্রা বাড়ায় এবং রাতেসেই তাপ অব্যাহত থাকে। উপরন্তু অন্যান্য ক্ষেত্র থেকে হিটিং, এয়ার কন্ডিশনার এবং যানবাহন ব্যবহারের মতো অন্যান্য কার্যকলাপের কারনে শহরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। 

ঢাকায় উচ্চহারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং নগর সম্প্রসারণের ফলে ব্যাপকভাবে বন উজাড় হয়েছে। এখানকার জলাশয়গুলোকে ভরাট করে নির্মিত হচ্ছে সূউচ্চ ভবন বা স্থাপনা। যার ফলে শহরের তাপমাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।  তবে মনে রাখতে হবে রাতারাতি নগর সম্প্রসারণ বন্ধ করা সম্ভব নয়। তবে সবুজ স্থান পুনরুদ্ধার এবং জলাশয় সংরক্ষণের জন্য পরিকল্পনাবিদ, নির্মাতা এবং ভোক্তাদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ঢাকার মতো জনাকীর্ণ শহরে, ভবনের তাপসৃষ্ট প্রভাব বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই শহরের  বিভিন্ন স্থাপনা থেকে কতটুকু তাপ উৎপন্ন হয় তা আমাদের পরিমাপ করতে হবে এবং পুরাতন বিল্ডিংগুলিকে শীতল করার উপায় বের করতে হবে। আমরা ভূমি অধিগ্রহণ ও অর্থায়নের ক্ষেত্রে জন্য সরকারী সংস্থার সাথে কাজ করছি। এক্ষেত্রে মিয়াওয়াকি ধারণা থেকে অনুপ্রাণিত  হয়ে আমরা নগর বনায়নের মতো একটি উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। 

People sat in an auditorium raise their hands and smile
২০২৩ সালে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন মিলনায়তনে একটি বস্তির বাসিন্দাদের মধ্যে বৃক্ষরোপণ অভিযানের উদ্বোধনের চিত্র (ছবি: চিফ হিট অফিসারের অফিস)

টেকসই নগর উন্নয়নের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। অনিয়ন্ত্রিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কারনে  শহর জুড়ে মিথেন হটস্পট তৈরি হয় যা মোকাবেলায় জরুরী পদক্ষেপের প্রয়োজন। আমরা প্লাস্টিকের বোতল পুনর্ব্যবহার করার জন্য আমাল ফাউন্ডেশনের মতো সংস্থার সাথে কাজ করছি৷ সবশেষে যে কথাটি বলা প্রয়োজন তা হচ্ছে ডেটা বা তথ্য সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণ। একটি বিষয়ে সার্বিক সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষেত্রে ডেটা বা প্রাথমিক তথ্যের প্রাপ্তি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আর সংশ্লিষ্ট ডেটা ব্যবহার করে নগরীর মানুষ তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রভাব থেকে পরিত্রানের বিভিন্ন কৌশল প্রনয়ন করতে পারে। তে পারে।

আরও তহবিল বা সহায়তা পেলে আপনি আর কী কী করতে পারতেন বলে মনে করেন?

অতিরিক্ত তহবিল বা সহায়তার মাধ্যমে আমরা নাগরিক সমাজ এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের সাথে আরও বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে সচেতনতা এবং অ্যাডভোকেসি প্রচেষ্টা গ্রহন করা যেতে পারে। আমরা বিশ্বাস করি যে উন্মুক্ত আলোচনা এবং সহযোগিতা সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত এবং কার্যকর উদ্যোগ গ্রহনে সহায়তা করে থাকে। 

বর্তমানে, আমরা নলেজ, অ্যাটিটিউড এবং প্র্যাকটিস (কেএপি) শীর্ষক একটি সমীক্ষার মাধ্যমে ২০,০০০ পরিবারকে যুক্ত করতে একটি স্বেচ্ছাসেবক নেটওয়ার্ক সংগঠিত করছি। এর প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে পরিবর্তনের লক্ষ্যে সম্ভাব্য বাধা হতে পারে এমন ভুল ধারণা বা ভুল বোঝাবুঝির বিষয়গুলো চিহ্নিত করা। এসব বিষয়গুলো জানা থাকলে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে কার্যকর কর্মপদ্ধতি ডিজাইন করা সহজ হয়। আমরা তাপদাহ থেকে সুরক্ষা পেতে সচেতনতামূলক ছোট একটি হ্যান্ডবুক তৈরি করেছি  যা সমীক্ষা চলাকালীন সময়ে আমরা আমাদের ভলান্টিয়ারসহ যানবাহনে যাত্রী, স্কুলের শিক্ষার্থী এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বিতরণ করবো। এছাড়াও আমরা একটি বিশেষ হাতপাখা তৈরি করেছি যা তাদের মধ্যে বিতরণ করবো। আরও তহবিল সংগ্রহ করতে পারলে আমরা এই ধরনের উদ্যোগ প্রসারিত করা যাবে বলে আমরা মনে করি। 

Two women water saplings in a garden
২০২৩ সালে ঢাকার বৃক্ষরোপণ অভিযানের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে স্থানীয় বাসিন্দারা গাছের চারা রোপন করছেন (ছবি: চিফ হিট অফিসারের অফিস)

এছাড়াও আমাদেরকে নগর বনায়নের উদ্যোগ বাস্তবায়নের কাজকে আরো ত্বরান্বিত করতে হবে, এবং পাশাপাশি ন্যাচার-ভিত্তিক সমাধানে আরো কাজ করতে হবে। 

তাপদাহের ফলে নারীরা কি জেন্ডার-ভিত্তিক সমস্যার সম্মুখীন হয়?

গণপরিবহন ব্যবহারকারী নারী যাত্রীদের জন্য স্যানিটেশনের অভাব একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ। যেহেতু নগরীতে পর্যাপ্ত পাবলিত টয়লেটের অভাব রয়েছে তাই নারীরা সাধারণত বাইরে চলাফেরার সময় পানি কম পান করে থাকেন, যাতে তারা টয়লেটের প্রয়োজনীয়তা কম বোধ করেন। এর ফলে তারা প্রচণ্ড গরমের সময় হাইড্রেটেড থাকতে পারেন না। একইভাবে গৃহস্থালির দায়িত্ব পালনের সময়, বিশেষ করে পরিবারের জন্য রান্না করা বা শিশুদের দেখাশোনা করার সময় তারা অধিক গরমের মধ্যে সময় কাটান। এতে স্বাস্থ্যের প্রতি ক্ষতির সম্মুখীন হন নারীরা।

 এখন শহরে নারী-বান্ধব টয়লেট স্থাপনে আমরা সিটি কর্পোরেশনসহ অন্যান্য অংশীদারদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি। আমরা এ ধরনের টয়লেটের নাম দিয়েছি ‘পিংক-টয়লেট’। এগুলো শহরের অধিকতর শীতল স্থান যেখানে গাছপালার কারনে কিছুটা ছায়া পাওয়া যায় সেসব স্থানে নির্মান করছি। এসব স্থান ঢাকা সিটি কর্পোরেশন আমাদের চিহ্নিত করে দিচ্ছে। এটি করা গেলে নারীরা কিছুটা স্বস্তি পাবে বলে আমরা মনে করি।

আমাদের সচেতনতামূলক পুস্তিকাটি তাপদাহের সময় গর্ভবতী বা কর্মজীবি নারীদের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় করনীয় সম্পর্কে খুব কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলে আমরা মনে করছি।   আমাদের বৃক্ষ রোপণ উদ্যোগে সাথে সম্পৃক্ত হবার জন্য শহরের বিভিন্ন বস্তিতে বসবাসকারীদের আমি ধন্যবাদ জানাই। পরিবেশ সংরক্ষণ এবং অভিযোজন বৃদ্ধির লক্ষ্যে তাদের এই অংশগ্রহন নিশ্চয়ই অনুপ্রেরণাদায়ক।

চরম উত্তাপের কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সাথে আপনি কীভাবে সহযোগিতা করছেন?

গত বছর, আমরা ইউএনডিপির একটি প্রকল্পের সাথে যুক্ত হয়ে শহরের ১৫টি বস্তির নারীদের সাথে কাজ করেছি। আমরা মূলত জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা এবং দেশজ বৃক্ষের চারা রোপন করেছি। এই কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে আমরা ৫,০০০টি গাছের চারা রোপণ করেছি।

People gathered around a tree sapling
গতবছর বুশরা আফরিন (সবুজ  পোশাক) ঢাকার ১৫টি বস্তির একটিতে পরিচালিত প্রশিক্ষণ সেশনে স্থানীয় নারীদের রোপণ করা গাছের যত্ন নিতে হয় তা শিখতে সাহায্য করছেন (ছবি: চিফ হিট অফিসারের অফিস)

আমার অফিস বাংলাদেশ আবহাওয়া বিভাগ (বিএমডি) এবং আফ্রিকা ও এশিয়ার জন্য আঞ্চলিক সমন্বিত মাল্টি-হ্যাজার্ড আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেমের (RIMES) সাথে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তির জন্য কাজ করছে। এর মাধ্যমে আমরা কেবলমাত্র  প্রয়োজনীয় তাপদাহের পূর্বাভাসই পাবো না, বরং এর মাধ্যমে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করা হবে। আর এটি ব্যবহরা করে তাপদাহের ঝুঁকি সম্পর্কে রিয়েল-টাইম তথ্য পাওয়ার পাশাপাশি এর থেকে পরিত্রানের উপায় এবং করণীয় সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাবে। 

প্রচারের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হিসাবে কাজ করবে এবং সেগুলি প্রশমিত করার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থার সুপারিশ করবে, যার ফলে জনসাধারণের প্রস্তুতি এবং স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি পাবে।

আমরা C40 নামে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে কাজ করছি যেটি আসলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় কাজ করা মেয়রদের একটি বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক। তাদের সাথে সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা  ঢাকার জন্য একটি জলবায়ু কর্ম পরিকল্পনার উন্নয়নে কাজ করছি। আমরা তাদের সাথে কর্মশালায় অংশগ্রহণ করে প্যারিস ৫০-ডিগ্রি তাপ পরিস্থিতি, এবং শহরগুলি কীভাবে চরম তাপ ঘটনার প্রতিক্রিয়া দেখায় তা পরীক্ষা করার জন্য সিম্যুলেশন করেছি। তারই ধারাবাহিকতায় প্রচণ্ড গরমের সময় স্কুল বন্ধের মতো সিদ্ধান্ত, আগুনের প্রাদুর্ভাবের জরুরী প্রতিক্রিয়া এবং তাপদাহের স্থানীয় বাসিন্দারের সহায়তার জন্য প্রটোকল তৈরি করা হয়। এছাড়াও বর্তমানে, আমরা আমাদের বেসলাইন কেএপি সমীক্ষার জন্য মেলবোর্নের মোনাশ ইউনিভার্সিটির দ্য সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিক্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি (CDES)-এর সাথে অংশীদারিত্বের জন্য কাজ করছি।

Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.

Strictly Necessary Cookies

Strictly Necessary Cookie should be enabled at all times so that we can save your preferences for cookie settings.

Analytics

This website uses Google Analytics to collect anonymous information such as the number of visitors to the site, and the most popular pages.

Keeping this cookie enabled helps us to improve our website.

Marketing

This website uses the following additional cookies:

(List the cookies that you are using on the website here.)