১৫ বছর আগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে ভারতের সঙ্গে জ্বালানিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশটির দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সূচনা হয়।
২০১৩ সালের অক্টোবরে প্রতিবেশী এই দুই দেশ তাদের বিদ্যুতের গ্রিড একে অপরের সাথে সংযুক্ত করে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো বিদ্যুৎ কেনার অনুমতি দিয়ে ভারত জ্বালানি ক্ষেত্রে সহযোগিতার পথ প্রশস্ত করে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের মধ্যে, বাংলাদেশ ভারতীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ২,৬৫৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনার জন্য তিনটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। এর মধ্যে রয়েছে ঝাড়খণ্ডের আদানি পাওয়ার প্ল্যান্ট (১,৪৯৬ মেগাওয়াট), বোহোরামপুর (১,০০০ মেগাওয়াট) এবং ত্রিপুরা (১৬০ মেগাওয়াট) উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন তিনটি বিদ্যুত কেন্দ্র।
বিদ্যুৎ আমদানির পাশাপাশি বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে রামপালে ১,৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন একটি কয়লা চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালুর কাজ শুরু করে। রামপাল বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত উপকুলীয় একটি এলাকা। দু’দেশের যৌথ এই প্ল্যান্টের প্রথম ইউনিটটি ২০২২ সালের ডিসেম্বরে উৎপাদন শুরু করে। এর দ্বিতীয় ইউনিটটি ২০২৩ সালের অক্টোবরে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করেছিল।কিন্তু এবছর আগস্টে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হবার পর থেকে দুদেশের মধ্যে জ্বালানি সহযোগিতার বিষয়টি এখন প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের চলাকালে সাইডলাইনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে সম্ভাব্য বৈঠকটি হয়নি। যদিও দুই সরকার এটিকে সময়ের কারনে সম্ভব হয়নি বলে উল্লেখ করলেও বৈঠক আয়োজনে ব্যর্থতা নিয়ে তীব্র জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে।
গত রবিবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব এবং ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারের মধ্যে একটি বৈঠকে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে আলোচিত হবার পাশাপাশি আরো বেশ কিছু বিষয় নিয়ে কথা হয়। এর মধ্যে ভিসা প্রক্রিয়া এখনও স্বাভাবিক না হওয়াসহ দুদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত যৌথ বৈঠকের পরবর্তী তারিখ নির্ধারিত না হবার বিষয়িটও গুরুত্ব পায়।
ডলারের সঙ্কট এবং উৎপাদনে যেতে না পারা বিদ্যুত কেন্দ্রগুলোর অকার্যকরতার কারনে স্বাভাবিকভাবেই দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বাংলাদেশকে বিদ্যুতের জন্য ভারতের প্রতি এখন চরমভাবে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। দেশের তৈরি পোশাক শিল্পসহ ব্যবসায়ি নেতা এবং সরকারী সূত্রগুলো চলমান এই অবস্থাকে অর্থনীতির জন্য বেশ নেতিবাচক হিসেবে উল্লেখ করেন। দুদেশের মধ্যে চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনার কারনে বিদ্যুদ তারা আমদানিকৃত সরবরাহের স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ডলার সংকট আর বাংলাদেশের বড় মাপের আমদানি বকেয়া
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ আমদানির ক্ষেত্রে একটি অন্যতম সংকটের কারন এখন তীব্র ডলার সংকট। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০২১ সালের আগস্টে ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে নেমে ২০২৪ সালের মে নাগাদ ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌছায়। এর পিছনে অন্যতম কারন ইউক্রেন যুদ্ধের কারনে বৈশ্বিক অস্থিরতা। অবশ্য সেপ্টেম্বরে রিজার্ভে কিছুটা উন্নতি দেখা যায়। সেপ্টেম্বরে দেশটির বিজার্ভের পরিমান ছিল ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ইজাজ হোসেন ডায়ালগ আর্থকে বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাসের অর্থ হচ্ছে ব্যয়বহুল আমদানি বেড়ে যাওয়া, বিশেষ করে নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কয়লা, গ্যাস এবং অন্যান্য উপকরণ আমদানির ক্ষমতা তীব্রভাবে সীমিত হয়ে আসা।
কাগজে কলমে বাংলাদেশের এই মুহুর্তে ২৭,৭৯১ মেগাওয়াটের বিদ্যুত উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ৬২টি কোম্পানি মোট উৎপাদন ক্ষমতা ১১,৮২১ মেগাওয়াট (মোট স্থাপিত ক্ষমতার ৪৩%) আর ৮০টি বেসরকারি খাতের প্ল্যান্টের উৎপাদন ক্ষমতা ১০,৮৩৬ মেগাওয়াট (৩৯%)। এছাড়া দুটি যৌথ কয়লা বিদ্যুত কেন্দ্র রয়েছে যার একটি ভারতের সাথে এবং অপরটি চীনের সাথে। এই দুটির উৎপাদন ক্ষমতা ২,৪৭৮ মেগাওয়াট ক্ষমতা (৯%)। আর এর বাইরে ভারত থেকে ২,৬৫৬ মেগাওয়াট (৯%) বিদ্যুত আমদানি করা যেতে পারে।
কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন বলে জানান বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) জনসংযোগ বিভাগে কর্মকতা মোঃ শামীম হাসান। তিনি বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানির ঘাটতির কারণে বাংলাদেশ প্রায় ১৪,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত সরবরাহ করতে সক্ষম এই মুহুর্তে। অথচ বর্তমানে দেশের চাহিদা প্রায় ১৫,৫০০ মেগাওয়াট, অর্থাৎ দৈনিক বিদ্যুতে ঘাটতি হচ্ছে ১০০০ থেকে প্রায় ১৫০০ মেগাওয়াট।
তিনি বলেন, আমাদের খরচ বেশি হলেও ভারত থেকে সরাসরি আমদানির মাধ্যমে আমরা বিদ্যুত পাচ্ছি।
“এটি করা না গেলে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ বড় সমস্যায় মুখে পড়তে পারে” উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে এই মুহুর্তে লোডশেডিংয়ের পরিমান ১,৫০০ মেগাওয়াট। আমরা এখন ভারত থেকে আমদানি করতে না পারলে এই পরিস্থিতি আরো চরম আকার ধারণ করতে পারে বলে মনে করেন শামীম হাসান।
দেশের সরকার পরিবর্তনের কারণে ভারত থেকে দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীল বিদ্যুত আমদানি একটি পর্যায়ে উদ্বেগের কারন হিসেবে দেখা দিতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
ডায়ালগ আর্থকে শামীম বলেন, “আদানির ঝাড়খন্ড থার্মাল প্ল্যান্টটি কেবলমাত্র বাংলাদেশেই বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু আমরা জানতে পেরেছি যে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর, ভারত সরকার আদানি গ্রুপকে তার অভ্যন্তরীণ বাজারে বিদ্যুৎ বিক্রির অনুমতি দিয়ে একটি আইন পাশ করে। এর অর্থ খুব পরিস্তার – চুক্তির শর্ত অত্যন্ত কঠোরভাবে নিশ্চিত করা না গেলে এই কেন্দ্রটি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুত এককভাবে বাংলাদেশের না পাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে, আদানি গ্রুপ গত মাসে ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ পাওনা পরিশোধের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে।বিপিডিবি কর্মকর্তারা ডায়ালগ আর্থকে জানান যে সরকার ডলার সংকটের এই সময়ে এরই মধ্যে আদানি গ্রুপকে বকেয়া বাবদ ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদান পরিশোধ করেছে, অচিরেই বাকি টাকা পরিশোধের আশ্বাস জানানো হয়েছে।
ভারত-বাংলাদেশ বিদ্যুত সহযোগিতায় প্রয়োজন আরও নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার
বাংলাদেশ ভারত থেকে তার মোট বিদ্যুতের চাহিদার “প্রায় ১৫%” আমদানি করছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন শামীম হোসেন
তিনি বলেন, “এটি আসলে একটি কার্যকর কোনো সিদ্ধান্ত হতে পারে না,” তিনি বলেন, ভারত থেকে আমদানিকৃত বিদ্যুতের তুলনায় বাংলাদেশে নিজস্ব গ্যাস-চালিত প্ল্যান্ট থেকে উৎপাদন ব্যয় অনেক কম। বাংলাদেশে গ্যাস চালিত কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় ইউনিট প্রতি ৬ টাকা (০.০৫ মার্কিন ডলার)। অন্যদিকে আদানি গ্রুপ থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুত আমদানিতে ব্যয় হয় ১৪ টাকা (০.১২ মার্কিন ডলার)।
আমরা যখন আমাদের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে গ্যাস, কয়লা এবং ডিজেল সরবরাহ পুনরুদ্ধার করতে পারবো তখন আমাদের ভারত থেকে কয়লা চালিত বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে না। দীর্ঘমেয়াদে, আমি মনে করি, ভারত থেকে কয়লা বিদ্যুৎ আমদানি বন্ধ হয়ে যাবে বলে মনে করেন শামীম হোসেন।
আমরা নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করলেও, তা পাওয়ার জন্য আমাদের ভারতীয় ভূখন্ড ব্যবহার করতে হবেহুমায়ুন কবীর, প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইন্সটিটিউট
আসলে একটি স্বল্প কার্বন অর্থনীতিতে দেশ হিসেবে নিজেকে রূপান্তর করতে হলে বাংলাদেশকে অবশ্যই ভারতের সাথে জ্বালানি সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে হবে। ভবিষ্যতে ভারত, নেপাল এবং ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করতে হতে পারে। আর সেটি করতে হলে বাংলাদেশকে অবশ্যই ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করেই নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে হবে।
চলতি বছরের জুন মাসে, বাংলাদেশ সরকার ভারত থেকে ১,০০০ মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ এবং ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করে নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানির জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। তবে এটি বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদার বিপরীতে যথেষ্টই সামান্য।
বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের প্রসিডেন্ট এবং ভারতে নিযুক্ত সাবেক ডেপুটি হাইকমিশনার হুমায়ুন কবির অবশ্য ভারতের সাথে বিদ্যুৎ সহযোগিতা পথটি অতীতের মতোই “উন্মুক্ত” থাকবে বলে আশা করেননি
তিনি মনে করেন বাংলাদেশ সরকার “ভারতের সাথে বিদ্যুত-ক্রয় চুক্তির বিষয়গুলো মূল্যায়ন করবে এবং তাদের সাথে এনিয়ে পুনরায় আলোচনার উদ্যেগ গ্রহন করবে। কারন “অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে আপাতত ভারত থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় চালিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই।”
“এমনকি আমরা যদি নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করি, তা পাওয়ার জন্য আমাদের অবশ্যই ভারতীয় ভূখন্ড ব্যবহার করতে হবে,” কবির যোগ করেন। “এই পটভূমিতে, সরকারকে ভারত থেকে বিদ্যুৎ কেনা বন্ধ করার মতো সিদ্ধান্ত গ্রহন করা ঠিক হবে না।”
তিনি শামীম হোসেনের সাথে একমত প্রকাশ করে বলেন যে ভবিষ্যত জ্বালানি সহযোগিতার জন্য জীবাশ্ম জ্বালানী-উত্পাদিত শক্তি থেকে দূরে সরে যেতে হবে।
“আমাদের আক্রমনাত্মকভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি সেক্টরের বিকাশের জন্য জার প্রচেষ্টা চালু করা উচিত। আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য শক্তির উত্স থেকে আমাদের চাহিদার কমপক্ষে ৫০% উৎপন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা উচিত। অথচ এই মুহুর্তে আমরা কেবল প্রয়োজনের ৪% উৎপাদনে সক্ষম।
রামপালের মতো কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি সুন্দরবনের কাছাকাছি থাকার কারণে পরিবেশবাদী গোষ্ঠীদের তীব্র সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছে এবং আদানির মতো অন্যান্য কেন্দ্রগুলোর মতো চড়া মূল্য থাকার কারনে নিন্দার শিকার হয়েছে।
অসম বিদ্যুৎ সরবরাহে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্য
বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ, কিংবা ঘাটতি আসলে দেশটির তৈরি পোশাক খাতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারন দেশটির মোট রপ্তানির ৮০% এর বেশি এই সেক্টর থেকে আসে এবং প্রায় চার মিলিয়ন মানুষ যাদের বেশিরভাগই দরিদ্র গ্রামীণ মহিলা যারা এই সেক্টরের সাথে সরাসরি জড়িত।
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন বলেন, লোডশেডিংয়ের প্রভাব কিছুটা মোকাবেলা করা যাবে। তিনি বলেন, “অধিকাংশ তৈরি পোশাক কারখানা এবং কুটির শিল্প তাদের নিজেদের ব্যয়ে পাওয়ার প্ল্যান্ট পরিচালনা করতে সক্ষম নয়। এদিকে সরকার মানসম্পন্ন বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারে না। ভোল্টেজের ওঠানামা আসলে শিল্প উৎপাদনকে বাধাগ্রস্থ করে। এছাড়াএই ধরনের ব্যক্তিগত উদ্যোগের কারনে ব্যয়ও বৃদ্ধি পায়।
মূল কথা হল, বিদ্যুতের ঘাটতি সকলকে প্রভাবিত করে, তা বড় হোক বা ছোট। যখন উ’পাদন খরচ বেড়ে যায়, তখন ব্যবসা কঠিন হয়ে যায় এবং শেষ পর্যন্ত আর লাভজনক থাকে না।মিতা বোস, ম্যানেজিং ডিরেক্টর, লেদারক্র্যাফট কোম্পানি গুজ লিমিটেড
মীর নাসির হোসেন বলেন, “সরকার যদি নিরবচ্ছিন্ন মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারে, তাহলে তৈরি পোশাক খাতসহ আমাদের শিল্প ইউনিটগুলোর ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং বিশ্বের অন্যান্য উৎপাদনকারী দেশগুলোর সাথে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম হবে।
“বর্তমান বিদ্যুতের সংকট তৈরি পোশাক শিল্পসহ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। কারণ তারা নিজেদের খরচে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে আর্থিকভাবে সক্ষম নয়। আর এই ধরনের শিল্প কারখানাগুলোর সাথে ব্যাপক সংখ্যক জনবল সম্পৃক্ত থাকে।
লেদারক্রাফ্ট কোম্পানি গুজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিতা বোস বলেন, এটি কিন্তু বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকেও প্রভাবিত হবে। এটি সত্য যে ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো নিজস্ব জেনারেটরের ব্যয়ভার বহন করতে পারে না যা বড় ব্যবসাগুলিকে উত্পাদন চালিয়ে যেতে সহায়তা করে। তবে এই অতিরিক্ত খরচের কারনে কিন্তু বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকেও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সংগ্রাম করতে হয়।
তিনি ডায়ালগ আর্থকে বলেন, “ব্যবসার ব্যয় বেড়ে যাওয়ার হচ্ছে একজন ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাতের মতো। আসলে বিদ্যুতের ঘাটতি সবাইকে প্রভাবিত করে, তা বড় বা ছোট যে ধরনের ব্যবসা উদ্যেগই হোক না কেন। যখন ব্যয় বেড়ে যায়, তখন ব্যবসা কঠিন হয়ে পড়ে এবং শেষ পর্যন্ত আর লাভজনক থাকে না। “